ষ্ট্যালিন
সামরিক অভিজাত শ্রেণী তথাকথিত পার্লামেণ্টারি গণতন্ত্রের উপর বীতশ্রদ্ধ হইয়া উঠিলেন এবং জনসাধারণের রাষ্ট্রীয় অধিকার হরণ করিয়া বুর্জ্জোয়া জাতীয়তাবাদী ডিক্টেটরশিপ স্থাপন করিতে প্রয়াসী হইলেন। এইরূপ একটা ভীতিমূলক শাসন ব্যতীত শ্রমিক শ্রেণীর অসন্তোষ দমিত হইবার নহে। জার্ম্মান ধনিক শ্রেণীর আর একটা সুবিধা ছিল শিক্ষিত মধ্যশ্রেণীর চিত্তে মহাযুদ্ধের পরাজয়ের অপমান-বেদনা এবং তাহার প্রতিশোধ স্পৃহা। ভার্সাই সন্ধির বিরুদ্ধে আক্রোশ এবং তাহার সংশোধনের দাবী লইয়া ফাশিষ্ট বা নাৎসী দল প্রবল হইয়া উঠিতেছিল। জনসাধারণকে ধাপ্পা দিবার জন্য এই দল “জাতীয় সমাজতন্ত্রী দল” এই নাম গ্রহণ করিল। এই দলকে প্রবল করিয়া তুলিবার জন্য শ্রমিক শ্রেণীর শত্রু ও বিরোধী জার্ম্মান ধনিক ও অভিজাত সামরিক শ্রেণী মুক্ত হস্তে অর্থব্যয় করিতে লাগিলেন। জাতীয় গৌরব-বুদ্ধি লইয়া জাগ্রত শিক্ষিত নিম্ন মধ্যশ্রেণীর উপর এই দল প্রভাব বিস্তার করিল। যাহাদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ছিল সেই সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতাগণ শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে কৃতঘ্নতা করিয়া গোপনে নাৎসী দলের সহিত আপোষ করিতে লাগিলেন। ১৯৩৩ সালে জার্ম্মান নাৎসী দলের সাফল্যের কারণ এই।
জার্ম্মানীর ঘটনাবলী বিশ্লেষণ করিয়া সপ্তদশ কংগ্রেসের বিবৃতিদান প্রসঙ্গে ষ্ট্যালিন বলিয়াছিলেন, “জার্ম্মানীতে ফাশিজম্-এর সাফল্যের কারণ কি? কেবল শ্রমিক শ্রেণীর দুর্ব্বলতা নয়। সোশ্যাল ডেমোক্রাটিক দল কর্ত্তৃক শ্রমিকদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়, যদিও ঐ দল ফাশিজম্ এর পথ প্রস্তুত করিয়াছে। আসল কারণ বুর্জ্জোয়া শ্রেণীর মৌলিক দুর্ব্বলতা। পার্লামেণ্টারি পদ্ধতির পুরাতন উপায়ে বুর্জ্জোয়া শ্রেণী
১২০