সাত
১৯৩৫ খৃষ্টাব্দে দেখা গেল যে ইউরোপীয় জাতিগুলি একদিকে ফাশিজম্-এর দিকে অগ্রসর হইতেছে, অন্যদিকে আর একটা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হইতেছে। যুদ্ধোপকরণ নির্মাণের বিপুল আয়োজনে অর্থনৈতিক সঙ্কট কিয়ং পরিমাণে দূরীভূত হইলেই অদূর ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা ইউরোপের বুকে দুঃস্বপ্নের মত চাপিয়া বসিল। কিরূপে এই অনিবার্য্য ও জটিল সমস্যার উদ্ভব হইল তাহা বিচার ও বিশ্লেষণ করা খুব কঠিন নহে।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে অতীতের সামন্ততান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যখন প্রায় নিশ্চিহ্ন হইয়া গেল তখন নবজাগ্রত মনুষ্য সমাজে রাজনীতিক্ষেত্রে মোটামুটি দুইটি দল লক্ষ্য করা গেল—রক্ষণশীল এবং বিপ্লববাদী। একদল চাহিল ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর প্রাচীন সমাজ-সংহতি রক্ষা করিতে, অন্যদল উহার পরিবর্ত্তন করিয়া চাহিল অধিকতর সামাজিক সুবিচার। সকল দেশেই এই দুই বিরুদ্ধ শক্তির সংঘর্ষ সংঘাত নানা আকারে প্রকাশ পাইতে লাগিল ক্রমে দেখা গেল আংশিক ভাবে সঙ্ঘবদ্ধ শ্রমিক শ্রেণী (ট্রেড ইউনিয়ম ও রাজনৈতিক মতবাদ) আন্তর্জ্জাতিক দৃটিভঙ্গি লইয়া সকল দেশেই একদল সহানুভূতিশীল ব্যক্তির সমর্থন লাভ করিতেছে, অন্যদিকে ফরাসী বিপ্লবের বংশধর মধ্যশ্রেণীর শাসকগণ তাহাদের রাষ্ট্রের শক্তি এবং বুদ্ধিজীবি সমর্থকদের লইয়া স্বাভাবিক উন্নতির নামে বিপ্লব প্রতিহত করিতেছে। এই দুই বাম ও দক্ষিণ পন্থার মধ্যে মধ্যপন্থী একটা দল শেওলার মত সর্ব্বদা ভাসিয়াছে।
১২৭