পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

তবে এই তৃতীয় পস্থার কোন বাস্তব অস্তিত্ব কোন দিনই ছিল না। আপোষ কখনও হয় নাই। যাহা বিপ্লবের ঘোতক নহে তাহাই রক্ষণশীলতা। নিরপেক্ষ ও উদাসীন জনসঙ্ঘের পাষাণ-ভার মধ্যপন্থী সংস্কারকদিগকে ক্রমে অকর্ম্মণ্য করিয়া ফেলিয়াছে। বিপ্লবমুখী চিন্তাধারা সংস্কারকদের ক্রমোন্নতি বা ক্রমপ্রাপ্তির আশ্বাসে কর্ণপাত করে নাই। যদি সমস্ত না পাওয়া তাহা হইলে কিছুই পাওয়া হইল না; ইহাই হইল বিপ্লবের মর্ম্মকথা!

 এই দুইয়ের মধ্যস্থলে মধ্যশ্রেণীর উদারনীতি একদল লোককে মোহাবিষ্ট করিতে লাগিল। এই মধ্যপন্থার বাণী হইল “প্রতিক্রিয়াশীলতাও নহে, রক্ষণশীলতাও নহে।” সামাজিক শক্তিগুলির গতিপ্রকৃতির ইহা অপব্যাখ্যা মাত্র। আসলে এই উদারনীতিও রক্ষণশীলতা —কেননা উদারনৈতিক দলও ধনতন্ত্রের কায়েমী স্বার্থকে সমর্থন করিয়াছে। ব্যক্তি ও জাতীয় স্বাধীনতার নামে সামাজিক অবিচার, শোষণ, দুর্নীতি এবং যুদ্ধকে সমর্থন করিয়াছে। উৎকট জাতীয়তাবাদ এবং পীড়ন ও শোষণমূলক সাম্রাজ্যবাদকে ইহারা মধ্যশ্রেণীর চাতুরি ও ধুর্ত্ততা লইয়া সমর্থন করিয়াছে।

 কিন্তু সমাজতন্ত্রবাদ আনিল নূতন বাণী। সমাজ ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত কিংবা মুষ্টিমেয় ব্যক্তির সমষ্টিগত লাভ দূর করিতে হইবে, সমস্ত লাভ পাইবে উৎপাদকেরা (শারীরিক ও মানসিক শ্রমিকেরা) এবং জাতিভেদ মনুষ্য সমাজের শেষ কথা নহে। জাতীয়তাবাদ হইতে অগ্রসর হইয়া আন্তর্জ্জাতিক উন্নতিতে উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং সমস্ত পৃথিবীর অধিবাসীদের ঐক্যের মধ্যে সামাজিক সমুন্নতিকে লইয়া যাইতে হইবে।

১২৮