পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

ব্যবসায় মুমূর্ষু হইয়া উঠিল। ধনতান্ত্রিক নীতির ইহা স্বাভাবিক পরিণাম। ইহা অতিরিক্ত পণ্য-উৎপাদনের ফল বলিয়া ব্যবসায়ীরা দেশে দেশে চীৎকার করিতে লাগিলেন, কিন্তু বর্ত্তমান জগতের উৎপন্ন পণ্য আসলে সমস্ত মনুষ্য জাতির ব্যবহারের পক্ষে প্রচুর নহে। দোষ উৎপাদনের নহে, দোষ বণ্টন-ব্যবস্থার, দোষ জাতীয় অর্থনৈতিক সঙ্কীর্ণতার এবং এই বড় বড় কলকারখানা ও শিল্প-বাণিজ্যের পশ্চাতে যে শান্তি-শঙ্কাহীন চৌর্য্য বৃত্তি রহিয়াছে তাহাও ইহার জন্য কম দায়ী নহে। অথচ ধনতন্ত্রবাদ তাহার চিরাচরিত কৌশলের পরিবর্ত্তন না করিয়াই যথাস্থানে প্রতিষ্ঠিত থাকিতে চাহিল। ধনতান্ত্রিক জগতের এই শোচনীয় মনোভাব দেখিয়া একদা ষ্ট্যালিন ব্যঙ্গ করিয়া বলিয়াছিলেন, অর্থ-সঙ্কট হইতে ধনতন্ত্রবাদ হয়ত বাহির হইয়া আসিবে কিন্তু সে আর উন্নত মস্তকে ফিরিয়া আসিতে পারিবে না, তাহাকে হামাগুড়ি দিয়া বাহির হইতে হইবে।

 সমাজতন্ত্রবাদের প্রসার, ক্ষয়িষ্ণু ধনতন্ত্রবাদের গতি দেখিয়া মধ্যশ্রেণী অতিদ্রুত নিজেদের মধ্যে কলহ-বিবাদ মিটাইয়া ফেলিল এবং বড় বড় বুলির মুখোস পরিয়া সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল। ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভগ্নদশা তাহারা আবৃত করিল। এই ছলনার আবরণই ফাশিজম্, মধ্যশ্রেণীর ক্ষমতা বজায় রাখিবার অপরিহার্য্য অস্ত্র। ধনতন্ত্রের অঙ্গে তাহারা নূতন বসন পরাইয়া দিল। শ্রমিক শ্রেণী ও সমাজতন্ত্রবাদকে তাহারা পশ্চাৎ হইতে ছুরিকাঘাত করিল। সমাজতান্ত্রিক বুলির মোড়কে মুড়িয়া তাহারা ফাশিজম্ চালাইতে লাগিল। অন্যদিকে পার্লামেণ্টারী পদ্ধতির গণতন্ত্র তাহারা বিলুপ্ত করিল, ব্যক্তি-স্বাধীনতার লেশমাত্র চিহ্নও তাহার। রাখিল না। ধনিক শ্রেণীকেও তাহারা একটা নূতন

১৩০