পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

 এই নূতন প্রতিক্রিয়াশীলতা শ্রমিক সঙ্ঘগুলিকে তীব্র ভাবে আক্রমণ করিল। মুসোলিনী ও হিটলার যাহা করিলেন তাহার প্রতিধ্বনি করিয়া ফরাসী রাষ্ট্রনেতা মঃ তরেদু পর্য্যন্ত বলিয়াছিলেন, “জগদ্ব্যাপী অর্থসঙ্কট দূর করিতে হইলে শ্রমিক-সঙ্ঘগুলিকে কঠোর ভাবে আয়ত্বের মধ্যে রাখা প্রয়োজন।” ইতালী ও জার্ম্মানীর রাষ্ট্রনীতি প্রকাশ্যে এবং ফ্রান্সে গোপনে উপরোক্ত ব্যবস্থার উপর আসিয়া দাঁড়াইয়াছিল। কিন্তু সমাজতন্ত্রবাদের বিরুদ্ধে ফাশিজম্-এর প্রধান অস্ত্র হইল জাতীয়তাবাদ।

 জার্ম্মানীতে উৎকট হিংস্র নব জাতীয়তাবাদের প্রচার কার্য্য চলিল। জার্ম্মান জাতির রক্তের বিশুদ্ধি রক্ষা করিবার জন্য “অ-জার্ম্মানী বিদেশীদিগকে” দলন-নীতি প্রবর্ত্তিত হইল। ইহুদি বিদ্বেষ প্রচার দ্বারা কৌশলে জার্ম্মান জাতিকে আন্তর্জ্জাতিকতার বিরুদ্ধে বিমুখ করিয়া তোলা হইল, ইহুদি-পীড়নের আবরণে সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদীদেরও দমন কার্য্য চলিতে লাগিল। ফাশিজম্-এর এই সংগ্রামশীল জাতীয়তাবাদ জার্ম্মানীর ধনিক সমাজের আশ্রয় স্থল হইয়া উঠিল। জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় মর্যাদার উদ্দীপনাময় হিংস্র বাণীর মদিরা জার্ম্মান জাতিকে উন্মত্ত করিয়া তুলিল। অনভিজ্ঞ জার্ম্মান যুবকগণ হিটলারের রহস্যময় জীবন এবং জ্বালাময়ী বক্তৃতায় মোহিত হইয়া নির্ব্বোধের মত বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখিতে লাগিল। “কেবল আমরা, জার্ম্মানীরা পৃথিবীতে আধিপতা করিবার জন্য জন্মিয়াছি। ইহার প্রতিবাদী যে কোন মতবাদ এবং যে কোন ব্যবস্থাকে দলিত করিতে হইবে।” ফাশিজমের এই বাণী কেবল জার্ম্মানী বা ইতালীতেই আবদ্ধ রহিল না। ইউরোপের ক্ষমতার আসনে প্রতিষ্ঠিত শাসকশ্রেণীও

১৩২