পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

কোন অধিকার ছিলনা এবং তাহাদের শ্রম কেবল ধনীর মুনাফা সৃষ্টির কাজে লাগিত। পুঁজিবাদী শ্রেণীর বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গে পণ্য উৎপাদনের কারখানাগুলি জনসাধারণের সম্পত্তিতে পরিণত হইয়াছে। সোভিয়েট রাশিয়ার জনসাধারণ রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতা করায়ত্ত করিয়া শোষক ও শোষিতের ভেদ দূর করার ফলে এক শ্রেণীহীন নৃতন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। রাশিয়ার এইরূপ শ্রেণীহীন অথচ বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত শ্রমিকশ্রেণী মনুষ্য জাতির ইতিহাসে ইতিপূর্ব্বে কুত্রাপি সম্ভব হয় নাই।

 অতীতে রাশিয়ায় ২০ লক্ষ কৃষক পরিবার সমগ্র দেশে ছড়াইয়া ছিল। ইহারা জরাজীর্ণ কুটীরে বাস করিত। আদিম কালের যন্ত্রপাতি দিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমিখণ্ড চাষ করিত এবং বংশানুক্রমিক ভাবে জমিদার মহাজন ব্যবসায়ী জোতদার ধর্ম্মযাজক প্রভৃতি শ্রেণীর দ্বারা শোষিত হইত। এখন নূতন কৃষক শ্রেণীর উপর স্তরে স্তরে শোষকশ্রেণী নাই। অধিকাংশ কৃষক সম্মিলিত কৃষিক্ষেত্রে যোগদান করিয়াছে। তাহারা একত্রে বাস করে, একত্রে শ্রমার্জিত সম্পদ ভোগ করে এবং একত্রে সমবায় নীতিতে আধুনিক যন্ত্রশক্তিদ্বারা চাষ করে। তাহারা শিক্ষিত, তাহারা রোগে চিকিৎসা ও শুশ্রূষা পায়; তাহাদের বসন ভূষণ মলিন ও জীর্ণ নহে। শিক্ষা সংস্কৃতি, খেলা-ধূলা, আমোদ-প্রমোদের আধুনিক যুগের সর্ব্ববিধ সুবিধাই তাহারা পাইয়া থাকে। এমন প্রসন্ন ও সুখী কৃষকশ্রেণী মানবের ইতিহাসে ইতিপূর্ব্বে কোথায়ও দেখা যায় নাই।

 তারপর সোভিয়েট রাশিয়ার বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়। শিক্ষা প্রণালীর আমুল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এক নূতন বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হইয়াছে। ইহাদের অধিকাংশ‍ই কৃষক ও শ্রমিক পরিবার হইতে

১৪১