ষ্ট্যালিন
তিয়েনসিন, সাংহাই-এর ঘাঁটি দখল করিয়া জাপান মহাচীনের বিপুল বাণিজ্য হস্তগত করিল এবং গ্রেটবৃটেন ও আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বহুল পরিমাণে ক্ষুণ্ণ করিল, অন্যদিকে চীনের জনসাধারণ আক্রমণকারী জাপ বাহিনীর সম্মুখীন হইল এবং চীনে এক অভূতপূর্ব্ব জাতীয় জাগরণ লক্ষ্য করা গেল। চীনের জাতীয় গভর্ণমেণ্ট অদ্যাবধি পরমাশ্চর্য্য শৌর্য্য বীর্য্যের সহিত জাপ সাম্রাজ্যবাদকে ঠেকাইয়া রাখিয়াছে। পরিণামে ইহার ফল কি হইবে বলা যায় না কিন্তু সাময়িকভাবে জাপান চীনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাণিজ্য হস্তগত করিয়াছে এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বৃটেন ও আমেরিকার বাণিজ্য স্বার্থ ও নৌ-শক্তির আধিপত্য বহুল পরিমাণে ক্ষুন্ন করিয়াছে।
এই সকল ঘটনা পরম্পরায় বোঝা গেল দ্বিতীয় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ বাস্তবে পরিণত হইতে চলিয়াছে। যুদ্ধ ঘোষণা না করিয়াও অন্ধকারে নিঃশব্দসঞ্চারী দস্যুর মত সাম্রাজ্য লোভী যুদ্ধ জগতের উপর ঝাপাইয়া পড়িল। রাষ্ট্র ও জাতিগুলি অজ্ঞাতসারেই এই দ্বিতীয় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের জটিল জালে জড়াইয়া পাড়ল। জার্ম্মানী ইতালী ও জাপানের ফাশিষ্ট শাসকগণই এই যুদ্ধকে একরূপ অবাধে জিব্রাল্টার হইতে সাংহাই পর্য্যন্ত বিস্তার করিল। ক্রমে দেখা গেল যে এই যুদ্ধ গ্রেটবৃটেন ফ্রান্স ও আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ধনতান্ত্রিক স্বার্থের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী অভিযান।
যুদ্ধের সূচনায় গ্রেটবৃটেন প্রভৃতি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি এইরূপ একটা ভান করিলেন যেন ইহার সহিত তাঁহাদের বিশেষ কোন সম্পর্ক নাই। তাঁহারা অতি মাত্রায় শান্তিবাদী হইয়া উঠিলেন এবং আক্রমণশীল ফাশিষ্টদের মুরুব্বীর মত ভর্ৎসনা করিতে লাগিলেন। একের পর আর স্তরে স্তরে নিজভূমি পরিত্যাগ করিয়াও তাঁহারা দেখাইতে লাগিলেন যে
১৫২