পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

প্রস্তুত হইল। যে কোন যুদ্ধ, তাহা যতই ক্ষুদ্র হউক না কেন, সর্ব্বদাই শান্তিকামী রাষ্ট্রগুলির পক্ষে দুশ্চিন্তার স্থল। দ্বিতীয় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ নিঃশব্দ পদসঞ্চারে জাতির পর জাতিকে অভিভূত করিয়া ফেলিল এবং সূচনাতেই পাঁচ কোটি নরনারীর ভাগ্য তাহার সহিত জড়াইয়া পড়িল। এই সংঘর্ষের স্ফুলিঙ্গ যে দেশে দেশে ছড়াইয়া পড়িবে, পড়িবে কি পড়িতেছে, এ সম্বন্ধে কাহারও মনে সংশয় রহিল না।

 ১৯৩১-৩২ হইতেই এই আসন্ন বিপদ সোভিয়েট রাশিয়ার অজ্ঞাত ছিল না। ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিবেষ্টিত একমাত্র সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের আত্মরক্ষার দায়িত্ব তুলনায় অনেক বেশী। আন্তর্জ্জাতিক রাজনীতিতে কূটনীতি যুদ্ধ কিছুদিন ঠেকাইয়া রাখিলেও সামরিক শক্তিই নিরাপত্তার একমাত্র ভরসা। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চার বৎসরের মধ্যে সমাপ্ত করিয়া সোভিয়েট সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে সামরিকভাবে প্রস্তুত হইবার ব্যবস্থা অবলম্বন করিল।

 পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সমাপ্তির পর ১৯৩৩-এর জানুয়ারী মাসে কেন্দ্রীয় পরিষদে রিপোর্ট দাখিল করিয়া ষ্ট্যালিন বলিয়াছেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল, কৃষিপ্রধান দুর্ব্বল ধনতান্ত্রিক দেশগুলির খেয়ালখুসীর উপর নির্ভরশীল সোভিয়েট যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক ধনতন্ত্রের খেয়ালখুসী হইতে মুক্ত করিয়া একটা শক্তিশালী শিল্পপ্রধান রাষ্ট্রে পরিণত করা।

 “অবশ্য আমাদের সঙ্কল্পের শতকরা ছয়ভাগ আমরা পূর্ণ করিতে পারি নাই। তাহার কারণ, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি আমাদের সহিত অনাক্রমণ চুক্তি করিতে অস্বীকার করিয়াছে এবং পূর্ব্ব এশিয়ার অবস্থা জটিল হইয়া উঠিয়াছে। ফলে আমাদের কতকগুলি কারখানা পণ্য

১৫৪