পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

পরিবর্ত্তিত হইতেছে। যুদ্ধোত্তর সমগ্র ব্যবস্থা, তথাকথিত শান্তির রাজত্বের ভিত্তি আজ বিচলিত। পক্ষান্তরে এই কালের মধ্যে সোভিয়েট ইউনিয়ন সমৃদ্ধিশালী হইয়াছে, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতিলাভ করিয়াছে, রাজনীতি ও সমরনীতির দিক দিয়া শক্তিশালী হইয়াছে এবং জগতে শান্তিরক্ষার জন্য চেষ্টা করিয়াছে।

 “তিনটি আক্রমণশীল রাষ্ট্র এই অভিনব সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের প্রবর্ত্তক। জাপান নয়টি রাষ্ট্রের সম্মিলিত সন্ধিপত্র (পূর্ব্ব এশিয়ায় শান্তিরক্ষার চুক্তি) ছিন্ন করিয়াছে, জার্ম্মানী ও ইতালী ভার্সাই সন্ধি পদদলিত করিয়াছে, স্বাধীনভাবে কাজ করিবার জন্য ইহারা রাষ্ট্রসঙ্ঘ ত্যাগ করিয়াছে। নূতন সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ আজ বাস্তব ঘটনা। আজকাল সন্ধিপত্র ও জনমত অগ্রাহ্য করিয়া সহসা যুদ্ধঘোষণা সহজ নয়। বুর্জ্জোয়া রাজনীতিকেরা এবং ফাশিষ্ট শাসকগণ ইহা ভাল করিয়াই জানে। এই কারণে ফাশিষ্ট শাসকেরা, যুদ্ধ·আরম্ভ করিবার পূর্ব্বে, অনুকুল জনমত গঠন করিবার চেষ্টা করিয়াছে, অর্থাৎ জনমতকে বিভ্রান্ত ও প্রতারণা করিবার চেষ্টা করিয়াছে।[১]

১৫৭

  1. ষ্ট্যালিন ১৯৩৬-এর ২৫শে নভেম্বর বার্লিনে “এণ্টি কমিনটার্ণ প্যাক্ট” বা আন্তর্জ্জাতিক সাম্যবাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সন্ধির প্রতি ইঙ্গিত করিয়াছেন। ইতালী, জার্ম্মানী ও জাপান এই তিনটি রাষ্ট্র পৃথিবীর সভ্যতাকে বলশেভিক প্লাবন হইতে রক্ষার মহান ব্রত ঘোষণা করিতে লাগিল। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রাজনীতিক ও সংবাদপত্রগুলি ফাশিষ্ট বংশীধ্বনির তালে তালে ফণা নাচাইয়া সোভিয়েট ব্যবস্থাকে দংশন করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। নাৎসী ফাশিষ্ট প্রচারকার্য্য অভূতপূর্ব্ব সাফল্যলাভ করিল। চেম্বারলেন-গভর্ণমেণ্ট তোষণনীতি অবলম্বন করিয়া, সোভিয়েটের প্রতি প্রকাশ্য বিরাগ দেখাইতে লাগিলেন।