শতধা বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। লেনিন এই আন্দোলনে ঝাঁপ দিলেন। তিনি মার্কসবাদের অনুকূলে প্রচারকার্য্য করিতে গিয়া দেখাইলেন বিশৃঙ্খল চমকপ্রদ সন্ত্রাসবাদের মধ্যে একটা মোহময় আকর্ষণ থাকিলেও আসলে উহা প্রতিক্রিয়াশীলদের দুঃস্বপ্ন মাত্র। প্রত্যক্ষদর্শীর মুখে আমরা শুনিয়াছি, ১৮৯৩ সালের মস্কোর এক গুপ্ত বৈঠকে ২৩ বৎসর বয়স্ক লেনিন মার্কসবাদীদের মুখপাত্ররূপে উপস্থিত থাকিয়া ‘পপুলিষ্ট’ সন্ত্রাসবাদীদলের তত্ত্ব-বিশ্লেষণকারী নেতা ভোরণ্শফের সহিত বাদে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন এবং জয়যুক্ত হইয়াছিলেন।
১৮৮৪ সালেই রাশিয়ায় সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল গঠিত হয়। ১৮৯১ সালের দুর্ভিক্ষের সময় এই দলের অগ্রগামী চিন্তানায়কগণ (প্লেখানফ্, এক্সেলরড্ প্রভৃতি) শ্রমজীবি শ্রেণীর সংস্পর্শে আসেন এবং অনেক সঙ্ঘ সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯৮ সালে মিন্স্ক কংগ্রেসে এই দলগুলি হইতে কেন্দ্রীয় সমিতি গঠিত হয়, কিন্তু এই দলের অধিকাংশ সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ায় কংগ্রেসের প্রস্তাব অনুযায়ী কার্য্য হইতে পারে নাই।
লেনিন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলকে সঙ্ঘবদ্ধ করিবার চেষ্টা দেখিতে লাগিলেন। ইহার নিয়মতন্ত্র ও গঠনতন্ত্র তিনি স্বহস্তে প্রস্তুত করিলেন। উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য তাঁহাকে যে কি কঠোর পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল তাহা বর্ণনাতীত। রুশীয় সমাজের প্রতিক্রিয়াশীল অভিজাত শ্রেণীর প্রবল প্রতাপে মেষবৎ ভীরু দাসভাবাপন্ন রুশীয় জনসাধারণ অধঃপতনের চরমে পৌঁছিয়াছে। রোমানভ্ বংশের পাশবিক শাসনে সমগ্র রাশিয়া সন্ত্রস্ত। আরামে ও আয়েসে থাকিয়া যাঁহারা রাজনীতির বিলাস করেন তাঁহারা অধিকাংশই প্রতারক ও প্রবঞ্চক। মধ্যশ্রেণীর কি নেতা কি কর্ম্মী সকলেই জনসাধারণের প্রদত্ত চাঁদা লুঠ করিতে ব্যস্ত। সোণার ঘড়ি চেন দুলাইয়া