পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

আলোকের, শৃঙ্খলের সহিত মুক্তির, বর্ব্বরতার সহিত মানবতার মহাযুদ্ধে, সমগ্র জগতের নরনারী বিস্ফারিত নেত্রে দেখিল, সোভিয়েট রাশিয়ায় ষ্ট্যালিন ও তাঁহার সহকর্ম্মীদের রণনৈপুন্য। লাল পণ্টনের আঘাত ও প্রতিঘাত করিবার প্রচণ্ড শক্তি মহাসমরের রক্তাক্ত বহ্নিশিখায় দীপ্যমান হইয়া উঠিল। আজ ক্ষণিক সাফল্যের মরু-মরীচিকায় প্রতারিত হিটলারবাহিনী ধ্বংসের মহাশ্মশানে সমাধি রচনা করিতেছে। রাশিয়ার শৌর্যবীর্য্য, রণনৈপুণ্য এবং সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন পদ্ধতির বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়। ইংলণ্ড ও আমেরিকার আভিজাত্যগর্ব্বী সম্রাজ্যবাদীরা বর্ত্তমান মহাযুদ্ধে রাশিয়াকেই নেতৃত্বপদে বরণ করিয়াছেন। স্বদেশকে শত্রুকবল হইতে মুক্ত করিবার মৃত্যুপণ সঙ্কল্প আজ সফল হইতে চলিয়াছে। দুর্য্যোগময়ী রজনীর অন্ধকার পট বিদীর্ণ করিয়া উদয়াচলের অরুণচ্ছটায় পূর্ব্ব দিগন্ত উদ্ভাসিত হইয়া উঠিতে বিলম্ব নাই। কার্ল মার্কসের সহকর্মী কম্যুনিজম্-এর অন্যতম প্রবর্ত্তক এঙ্গেলস্ ১৮৪৫ সালে যে ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন, এক শতাব্দীর ব্যবধানে হিটলার তাহা মর্ম্মে মর্ম্মে উপলব্ধি করিতেছেন,—“যুদ্ধের সময় কম্যুনিষ্ট সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি প্রকৃত পিতৃভূমি, প্রকৃত স্বদেশ রক্ষা করিবার ভার পাইবে; অতএব সে এমন বীরত্ব, ধৈর্য্য, উৎসাহ ও সাহসের সহিত যুদ্ধ করিবে, যাহার সম্মুখে, যে কোন আধুনিক যন্ত্রবৎ পরিচালিত সৈন্যদশ তূলারাশির মত উড়িয়া যাইবে।” আমরাও দেখিতেছি, দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ হিংস্র পশুর মত কাতারে কাতারে যে সৈন্যদল নাৎসী নরমেধ যজ্ঞে আত্মাহুতি দিতেছে, তাহারা জানেনা যে, এই যুদ্ধের লক্ষ্য কি, উদ্দেশ্য কি? পক্ষান্তরে রাশিয়ার সেনাপতি ও সৈনিক হইতে কৃষক, মজুর, বুদ্ধিজীবি সকলেই জানে যে, তাহাদের এই যুদ্ধ কেবল স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ নহে,

১৭০