তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা রুশ সরকারের অধীনে ক্ষমতার পদ পাইবার জন্য লোলুপ। এই অবস্থার মধ্যে যখন মার্কসবাদ আসিয়া রাশিয়ায় উপস্থিত হইল, সেই সময় ১৮৯৭ সাল হইতে জোসেফ্ ষ্ট্যালিন সেই সুরে তাঁহার জীবনের সুর মিলাইয়া লইলেন; এই বুদ্ধিমান সুগঠিত দেহ সৌম্যকাস্তি কৃষক-যুবক বিপ্লবীর জীবন বরণ করিলেন। টিফ্লিসের রেলওয়ে শ্রমজীবি, তামাকের কারখানার, জুতার কারখানার শ্রমজীবিদের মধ্যে তিনি বিচরণ করিতে লাগিলেন। তাঁহার অপেক্ষা দশ বৎসর বয়সে বড় লেনিন তখন রাশিয়ার মর্ম্মকেন্দ্রে বসিয়া বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিতেছিলেন। অতীতের বিপুল ধ্বংসস্তুপ বিপ্লবের চিতা চূল্লীতে দগ্ধ করিয়া রাশিয়া নবজন্ম লাভ করিবে এই চিন্তা ছাড়া তাঁহার কোন চিন্তা ছিল না। এই সময় শ্রমজীবিদের বন্ধু “সোসো” লেনিনের নাম শুনিয়াছিলেন এবং তাঁহার রচনা পাঠ করিয়াছিলেন; কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরস্পরের সহিত পরিচিত হন নাই।
রাশিয়ার ইতিহাসের এই দুঃসময়ে কোন দিকেই আশার চিহ্ন ছিল না এবং রাজনৈতিক কার্য্যক্ষেত্র অত্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। সশস্ত্র বিদ্রোহ তখন কল্পনার অভীত বিষয়; বে-আইনী পুস্তিকা ও বিবৃতি গোপন ছাপাখানায় মুদ্রণ, শ্রমজীবিদের মধ্যে তাহা বিতরণ, নূতন সদস্য সংগ্রহ এবং এই সকল কাজের জন্য ধৃত ও বিচারাধীন সদস্যদের আদালতে পক্ষ সমর্থনের জন্য অর্থ সংগ্রহ—ইহার মধ্যেই দলের কার্য্য আবদ্ধ ছিল। রুশ গভর্ণমেণ্ট সর্ব্ববিধ ব্যক্তি-স্বাধীনতা দমন করিয়াছিলেন, সংবাদপত্রে সরকারী অনুমোদিত সংবাদমাত্র প্রকাশিত হইতে পারিত। প্রকাশ্যভাবে কোন দলের বা মতের প্রচার কার্য্য সংবাদপত্রে চলিত না। এই কালে ষ্ট্যালিনের সহকর্ম্মী ওরাখেলাস্ভিলি লিখিয়াছেন, “তাঁহার (ষ্ট্যালিন) সহিত একত্র হইয়া