ষ্ট্যালিন
করিবার শক্তি তাঁহাকে নেতার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখিয়াছে। মানুষ চিনিতে তাঁহার কখনও ভুল হয় না। বিশাল কম্যুনিষ্ট পার্টির অধিকাংশ সদস্যই তাঁহার স্নুপরিচিত; সহকর্ম্মী ও দলের সাধারণ সদস্যদের মধ্যে তিনি কোন পার্থক্য রাখেন না। দূরে সরিয়া থাকিয়া এক রহস্যময় জীবনের মোহজাল দ্বারা জনমণ্ডলীকে আচ্ছন্ন করিবার মত ডিক্টেটরী মনোবৃত্তি তাঁহার কোন কালে ছিল না। রাশিয়ার আর দশজন সাধারণ মানুষের মতই তিনি সকলের সহিত মিলিয়া মিশিয়া অনাড়ম্বর জীবন যাপন করেন।
লেনিন ও ষ্ট্যালিন এই দুইটী নাম রাশিয়ার বিপ্লব ও পুনর্গঠনের ইতিহাসে অবিচ্ছেদ্য। এই দুই ইতিহাস-স্মরণীয় চরিত্রের তুলনামূলক বিচার আমরা করিব না। কিন্তু ইতিহাস পথে আমরা দেখিয়াছি এই দুই চরিত্রে পার্থক্য থাকিলেও সাদৃশ্যও প্রচুর, মার্কসবাদ সম্বন্ধে জ্ঞান এবং বাস্তববাদীর দৃষ্টিভঙ্গী ও অদম্য দৃঢ়তায় উভয়েই সমান, পার্থক্য এই যে, লেনিন জননায়ক, ষ্ট্যালিন ঘটনাবলীর নিয়ামক; লেনিন মহান, ষ্ট্যালিন শক্তিমান। বলিলে আরও বলা যায় যে লেনিনের জীবন মতবাদ প্রচারেই অতিবাহিত হইয়াছে, নূতন বিধি ব্যবস্থাকে পরিচালন করিবার অবসর তিনি পান নাই। তাঁহার পর ষ্ট্যালিন কম্যুনিষ্ট পার্টিকে অধিকতর সঙ্ঘবদ্ধ করিয়া বৈপ্লবিক ও গঠনমূলক কার্য্য যুগপৎ পরিচালনা করিয়াছেন। ক্রমে ষ্ট্যালিনের মধ্যেও পরিবর্ত্তন আমরা দেখিয়াছি। সঙ্কটের মুহূর্ত্তে তিনি ধৈর্য্যের সহিত সময়ের অপেক্ষা করিয়াছেন, প্রয়োজনের মুহূর্ত্তে দ্রুতপদ বিক্ষেপকে সংযত করিয়াছেন। অনেক সময় তাঁহার ধৈর্য্যে উৎসাহী সদস্যদের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটিয়াছে কিন্তু পরে তাঁহারা ষ্ট্যালিনের দূরদর্শিতার প্রশংসা করিয়াছেন, শিল্প ও কৃষি ব্যবস্থাকে সমাজতান্ত্রিক ভত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করিবার উদ্যম ও প্রচেষ্টায় প্রতিপদক্ষেপে ষ্ট্যালিন
১৭৩