পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

গভীর ভাবে চিন্তা করিয়াছেন, সকল দিক তুলমূল করিয়া বিচার করিয়াছেন। সহজ বিশ্বাসীর লঘু উৎসাহ লইয়া তিনি কখনও মাতিয়া উঠিতেন না। একদিন কথাপ্রসঙ্গে তিনি তাঁহার কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বলিয়াছিলেন, “সঙ্ঘবদ্ধ হইয়া কাজ করিবার পক্ষে কিছু পরিমাণে যুক্তি সঙ্গত অবিশ্বাস মনে থাকা ভাল!” সিংহ যেমন সকল দিক পর্যবেক্ষণ করিয়া অবশেষে অব্যর্থ সন্ধানে শিকারের উপর ঝাঁপাইয়া পড়ে, ষ্ট্যালিনের চরিত্রে আমরা সেইরূপ সাবধানতার সহিত সমগ্র বল প্রয়োগ করিবার কৌশল দেখিতে পাই।

 আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি ষ্ট্যালিন অতি সাধারণ জীবন যাপন করিয়া থাকেন। আলাপ আলোচনায় তিনি সদালাপী, পরিহাস রসিক। কোন বিষয় আলোচনা কালে তিনি যখন মাতিয়া উঠেন অথবা কোন ভ্রান্ত যুক্তি খণ্ডন করেন তখন তাঁহার বুদ্ধির ঔজ্জ্বল্যে প্রত্যেকটি কথা শাণিত তরবারির মত ঝলসিয়া উঠে। তবে তাঁহার সাক্ষাৎ পাওয়া কঠিন।

 ভূতপূর্ধ্ব রুশ সম্রাটগণের বিরাট প্রাসাদ ক্রেমলিনের খ্যাতি জগৎবিশ্রুত। কত সুসজ্জিত হর্ম্ম্য কত মনোহর গির্জায় এই রাজপ্রাসাদ সুশোভিত। শতাব্দীর পর শতাব্দী রুশ সম্রাটগণের ঐশ্বর্য্য এই প্রাসাদকে সৃষ্টি করিয়াছে। এই প্রাসাদে জারের ভৃত্যগণের জন্য নির্ম্মিত ভবনে একটী সামান্য অংশে সমগ্র রাশিয়ার রাষ্ট্রগুরু ষ্ট্যালিন বাস করেন। দোতলায় তিনটী ঘর, জানালায় অতি সাধারণ শাদা পর্দ্দা; আসবাব পত্রের কোন বাহুল্য নাই। ইহারই একটী ঘরে ডিম্বাক্বতি একটী ছোট টেবিলে, ষ্ট্যালিন আহার করেন। একজন পরিচারিকা নিকটস্থ একটী সাধারণ হোটেল হইতে তাঁহার খাদ্য আনিয়া দেয়। ক্রেমলিনে যাঁহারা তাঁহার সহিত দেখা করিতে গিয়াছেন তাঁহারা কখনও সিড়িতে বা ঘরে

১৭৪