ষ্ট্যালিন
১৯৩২ সালের ৮ই নভেম্বর সংবাদ প্রচারিত হইল যে মিসেস্ ষ্ট্যালিন মৃত। তাঁহার বয়স মাত্র ৩৮ বৎসর হইয়াছিল এবং ইতিপূর্ব্বে তাঁহার কোন রোগের সংবাদ প্রচারিত হয় নাই। রাশিয়ার বাহিরে ইউরোপের সোভিয়েট বিদ্বেষীরা এই সংবাদ লইয়া মাতিয়া উঠিল এবং আজগুবি কাহিনী প্রচার করিয়া এই মৃত্যুকে হত্যা বা আত্মহত্যার সামিল করিয়া তুলিল। বিবাহিত জীবনে ষ্ট্যালিনপত্নী সুখী ছিলেন না, বহুবর্ষ ধরিয়া তিনি অত্যাচার সহ্য করিয়াছেন এবং অবশেষে গভীর নৈরাশ্যে আত্মহত্যা করিয়াছেন ইত্যাদি। কিন্তু এই সকল কুৎসা রটনাকারী যুক্তি বা প্রমাণের কোন ধার ধারে না। কার্যতঃ ষ্ট্যালিনপত্নী বিবাহিত জীবনের প্রথম ১০ বৎসর গৃহকর্ম্ম লইয়া ব্যাপৃত ছিলেন এবং তাঁহার পুত্র কন্যারা বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্য্যন্ত তিনি বাহিরের কোন কাজে যোগ দিতেন না। ষ্ট্যালিনের সহকর্ম্মীরা জানেন যে ষ্ট্যালিন সময় পাইলেই তাঁহাদের সহরতলীর ক্ষুদ্র বাড়ীতে গিয়া পত্নীর সহিত মিলিত হইতেন। ষ্ট্যালিনপত্নী মৃদু স্বভাবা এবং নিরভিমানী ছিলেন। স্বামী ও সন্তানসন্ততিগণের সেবাই ছিল তাঁহার আনন্দ। তিনি কখনও নিজের দুঃখ-কষ্টের কথা বলিয়া স্বামীকে বিব্রত করিতেন না। কথিত আছে যে তিনি জটিল স্ত্রীরোগে ভুগিতেছিলেন এবং সে কথা দীর্ঘকাল স্বামীর নিকট গোপন রাখিয়াছিলেন এবং অবশেষে রোগ যখন ধরা পড়িল তখন চিকিৎসকেরা আসিয়া দেখিলেন, চিকিৎসার সময় অতীত হইয়াছে। পত্নীর মৃত্যুর পর বোঝা গেল যে ষ্ট্যালিন তাঁহার জীবন-সঙ্গিনীকে কত গভীর ভাবে ভালবাসিতেন। আধুনিক রাশিয়ায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কোন আড়ম্বর হয় না। সাধারণতঃ আত্মীয় স্বজনের মৃতদেহ শ্মশানে চিতা-চুল্লিতে ভস্ম করা হয়। কেবল প্রাচীন পন্থীরাই খৃষ্টানী মতে শোভাযাত্রা করিয়া শব সমাধিস্থ করিয়া
১৮২