ষ্ট্যালিন
ভাবাবেগের উপর তাঁহার কোন আস্থা নাই। তিনি মানুষকে উত্তেজিত করিবার পরিবর্ত্তে যুক্তির দ্বারা তাহার শুভবুদ্ধি উদ্বোধন করিবার চেষ্টা করিয়া থাকেন।
অতীত ও ভবিষ্যৎ জগতের মধ্যস্থলে দাঁড়াইয়া এই অনন্যসাধারণ প্রতিভাশালী পুরুষ একটা নূতন জাতি ও নূতন সমাজ ব্যবস্থা তাঁহার সহকর্ম্মীদের সহিত নিয়ন্ত্রণ করিতেছেন। এই নিয়ন্ত্রণের অর্থ নূতন কিছু সৃষ্টি নহে, গতিশীল মনুষ্য সমাজের অন্তর্নিহিত প্রয়োজনকে আবিষ্কার। যাঁহারা এইটী বুঝেন না তাঁহারা ফ্যাশিষ্ট আদর্শের সহিত সমাজতান্ত্রিক আদর্শের পার্থক্য কোন কালেই বুঝিবেন না এবং এই কারণেই ষ্ট্যালিন ও নবীন রাশিয়া তাঁহাদের নিকট বিস্ময় ও বিদ্বেষের বস্তু।
ষ্ট্যালিনকে ক্ষুদ্র ও খর্ব্ব করিয়া দেখিবার দেখাইবার বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ষ্ট্যালিন আজ লক্ষ কোটি নরনারীর হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে উপবিষ্ট। আমরা বহু দূরবর্ত্তী দেশের লোক হইলেও অপরিচয়ের ব্যবধান থাকিলেও তাঁহার চরিত্র ও জীবন আলোচনা করিলাম এবং এই আলোচনায় যথাসাধ্য নিরপেক্ষ দৃষ্টি লইয়াই অগ্রসর হইয়াছি। অতি সাধারণ পরিবার হইতে যে কৃষক যুবক একদিন সর্ব্বমানবের মুক্তি কামনায় অধীর হইয়া গৃহ পরিজন ত্যাগ করিয়াছিল, কে জানিত যে এক বিশাল দেশের বিপুল জন সমষ্টির নেতা, গুরু ও পথপ্রদর্শকরূপে তিনি সমসাময়িক ইতিহাসে এমন চিরস্মরণীয় কীর্ত্তি স্থাপন করিবেন। ইতিহাসে কেবল ঘটনাই ঘটে না, অঘটন ঘটে এবং সেই অঘটন আবার এক রূপান্তরিত নবীন ঘটনাপুঞ্জের মধ্য দিয়া অগ্রসর হয়। ইতিহাসের সেই পরম রহস্যময় গতিকে যাহারা বুঝিতে পারেন এবং তাহাকে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারেন
১৮৪