সামঞ্জস্যমূলক প্রতীক্ষায় বিশ্বাসী নহে। সে ভাঙ্গিতে চায়, গড়িতে চায়, মানব জাতির কল্যাণময় পরিণাম সম্বন্ধে তাহার যথেষ্ট ভাবাবেগ থাকিলেও সে কখনই বিচার-বুদ্ধিকে আবেগ দ্বারা আচ্ছন্ন করে না। সাধারণতঃ অনেকের ধারণা যে মানুষ অত্যাচার-পীড়িত হইয়া বিপ্লবী হয়; কিন্তু ষ্ট্যালিনের জীবনে ইহা মিথ্যা প্রমাণিত হইয়াছে।
বিখ্যাত জার্ম্মাণ সাহিত্যিক এমিল লুড্উইক্ কয়েক বৎসর পূর্ব্বে ষ্ট্যালিনকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, “সম্ভবতঃ আপনি বাল্যকালে পিতামাতার নিকট অত্যন্ত দুর্ব্যবহার পাইয়াছিলেন বলিয়। এরূপ বিপ্লবী হইয়াছেন।” এমিল লুড্উইক্ শ্রেণীর অমায়িক ভদ্রলোকেরা সকল দেশেই এইরূপ তথ্য আবিষ্কার করিবার চেষ্টা করেন। বিপ্লবীর জীবন ভাগ্যবিড়ম্বনায় তিক্ত অথবা কিশোর বয়সে নির্দ্দয় পিতামাতা কর্ত্তৃক পীড়িত হওয়া আবশ্যক এই শ্রেণীর দুর্ব্বল যুক্তি প্রতিবাদের অযোগ্য। অবশ্য ব্যক্তি ও জাতি সময় সময় দুর্ভাগ্য ও পীড়নে মাথা তুলিয়া দাঁড়াইয়াছে; কিন্তু যে বিপ্লবী সর্ব্বমানবের উন্নতির সুনিশ্চিত বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনার সন্ধান পাইয়াছে, সে কখনও ব্যক্তিগত অসন্তোষ দ্বারা চালিত হয় না। লুড্উইকের প্রশ্নে ষ্ট্যালিন শান্তভাবে উত্তর দিয়াছিলেন, “আপনার ধারণা ভুল, আমার পিতামাতা কখনও অসদ্ব্যবহার করেন নাই। আমি যে বিপ্লবী হইয়াছিলাম তাহার কারণ অতি সরল, আমার মনে হইয়াছিল মার্কসপন্থীরাই ঠিক পথ বাছিয়া লইয়াছে।”
এই সময় লেনিনের সহকর্ত্রী এবং ট্রান্স-ককেসিয়ায় তাঁহার মতবাদ প্রচারকারী কুরনাটভোস্কির দ্বারা ষ্ট্যালিন প্রভাবান্বিত হন। ইহার নিকট ষ্ট্যালিন লেনিনের পরিচয় পান এবং বুঝিতে পারেন যে লেনিনই মার্কসবাদ ঠিক ঠিক প্রচার করিতেছেন এবং তদনুযায়ী কার্য্য করিতেছেন। এই