সময় ষ্ট্যালিন সম্পূর্ণরূপে নিঃস্ব ছিলেন। ১৯০০ খৃষ্টাব্দে আমরা দেখি অন্নবস্ত্রের অভাব সহকর্মীদের সাহায্যে পূরণ করিয়া ষ্ট্যালিন টিফ্ লিসে শ্রমিকদের মধ্যে কার্য্য করিতেছেন। প্রতি সন্ধ্যায় তাঁহাকে ৭৷৮টী গুপ্ত বৈঠকে যোগদান করিতে হইত। তিনি সভায় সহসা উপস্থিত হইতেন, চুপ করিয়া বসিয়া সকলের কথা শুনিতেন এবং সকলের কথা শুনিবার পর নিজের যাহা বলিবার বলিতেন। তাঁহার পশ্চাতে তখন গোয়েন্দা লাগিয়াছে, কাজেই দুই তিন জন সহকর্ম্মী লইয়া তাঁহাকে সাবধানে বিচরণ করিতে হইত। স্থানীয় জনৈক সঙ্গতিপন্ন রাজভক্তের এক প্রকাণ্ড পুস্তকালয় ছিল, সেইখানে যুবক বিপ্লবীরা পড়িবার ভাণ করিয়া সম্মিলিত হইতেন এবং নিষিদ্ধ সংবাদাদি আদান প্রদান করিতেন। এইখানে বসিয়াই ষ্ট্যালিন জাল পাসপোর্ট দিয়া দুইজন সহকর্ম্মীর পলায়নের সহায়তা করেন এবং তাঁহারা পুলিশের দৃষ্টি এড়াইয়া পলায়ন করিতে সমর্থ হন। কিন্তু তিনি সব সময় পলাইয়া বেড়াইতেন না, প্রয়োজন হইলে তিনি প্রকাশ্য রাজপথে আসিয়া দাঁড়াইতেন। ১৯০১ সালে ককেসাসে প্রথম ‘মে ডে’ অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি তাহাতে যোগ দেন। ১৯০০-০১ সালে কতকগুলি বড় বড় ধর্ম্মঘট হয়, ষ্ট্যালিন এই সকল ধর্ম্মঘটের পশ্চাতে ছিলেন। টিফ্লিস রেলওয়ে ধর্ম্মঘটীদের বিরাট শোভাযাত্রার অগ্রভাগে তিনি ছিলেন; পুলিশ কর্ম্মচারী আসিয়া যখন হুকুম দিলেন যে এই মুহূর্ত্তেই তাহাদের ছত্রভঙ্গ হইতে হইবে তখন ধর্ম্মঘটীদের নেতারূপে ষ্ট্যালিন উত্তর দিলেন, “আমাদিগকে ভয় দেখাইও না, আমাদের দাবী পূর্ণ হইলেই আমরা ছত্রভঙ্গ হইব।” বলাবাহুল্য পুলিশ শোভাযাত্রার উপর চড়াও হইল এবং মার খাইয়া নিরস্ত্র জনতা ছত্রভঙ্গ হইয়া গেল। কর্তৃপক্ষ কঠোর দমননীতি অবলম্বন করিলেন, টিফ্লিসের সোস্যাল
পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/২২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন
১৪