পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

আসিয়াছে। ষ্ট্যালিন জেলে আসিয়াই কতকগুলি পাঠ-চক্র স্থাপন করিলেন এবং কয়েদীদিগকে মার্কসিজ‍্ম্ শিক্ষা দিতে লাগিলেন। বক্তৃতা করা অপেক্ষা ব্যক্তিগত আলোচনাই ষ্ট্যালিন পছন্দ করিতেন। “বৈপ্লবিক সমাজতন্ত্রীর।” প্রায়ই তর্কে প্রবৃত্ত হইয়া হাতাহাতি করিয়া বসিত। ইহাদের পারস্পরিক কলহ ভঞ্জন করিতে গিয়া ষ্ট্যালিন যুক্তিতর্ক দ্বারা অনেককে বলশেভিক দলে ভিড়াইতে সক্ষম হইয়াছিলেন। জেলে অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং কঠোর ব্যবস্থার ফলে বহু রাজনৈতিক বন্দী পীড়িত হইয়া পড়েন। ষ্ট্যালিনের সুগঠিত দেহে ক্ষয়রোগের লক্ষণ দেখা দিল। এই ক্ষয়রোগ হইতে তিনি আশ্চর্য্যরূপে আরোগ্য লাভ করেন। তিনি যখন সাইবেরিয়ায়, তখন মুক্ত প্রান্তরে একদিন অকস্মাৎ তুষার ঝটিকা আরম্ভ হইল। এইরূপ ঝটিকা আরম্ভ হইলে লোকে আত্মরক্ষার জন্য শুইয়া পড়িয়া বরফের নীচে আশ্রয় লয়। কিন্তু ষ্ট্যালিন এক জমাট নদীর উপর দিয়া অগ্রসর হইতে লাগিলেন। দুই মাইল পথ অতিক্রম করিয়া নিকটতম কুটীরে আসিতে তাঁহার কয়েক ঘণ্টা সময় লাগিয়াছিল। অবশেষে তিনি যখন কুটীরের মধ্যে প্রবেশ করিলেন তখন লোকেরা সেই তুষারাবৃত দেহ দেখিয়। তাঁহাকে মনুষ্যেতর জীব বলিয়া ভ্রম করিল। অবশেষে তাহারা যখন বুঝিল যে জন্তুটী মানুষ তখন হাত পা মুখ হইতে বরফ ঝাড়িয়া ফেলিয়া তাঁহার পরিচর্য্যা করিল। ক্লান্ত ষ্ট্যালিন অচৈতন্য হইয়া পড়িয়া গেলেন এবং একাদিক্রমে আঠার ঘণ্টা কাল নিদ্রিত রহিলেন। তাঁহার এই দুঃসাহসের ফলে তিনি চিরতরে ক্ষয়রোগ হইতে আরোগ্য লাভ করিলেন। সাইবেরিয়ার রীতিই এই। সাইবেরিয়ার দুরন্ত শীতে যদি কোনক্রমে ক্ষয়রোগীর মৃত্যু না হয় তাহা হইলে সে চিরদিনের মত আরোগ্য

১৮