লাভ করে। ইহার মাঝামাঝি কিছু নাই। শীত হয় রোগ, নয় রোগীকে শেষ করে।
১৯০৩ সালে কারাগারে ষ্ট্যালিন শুনিতে পাইলেন যে সোশাল ডেমোক্রেটিক দলে দলাদলি দেখা দিয়াছে। লেনিনের নেতৃত্বে চালিত বলশেভিক দল হইতে মেনশেভিক দল স্বতন্ত্র হইয়া গিয়াছে। বলশেভিকেরা ছিল চরমপন্থী—আপোষহীন শ্রেণী সংগ্রামের তাহারা ছিল অপরাহত যোদ্ধা। পক্ষান্তরে মেনশেভিকরা সংস্কারপন্থী, সামঞ্জস্য স্থাপনে উন্মুখ এবং অন্যান্য দলের সহিত আপোষ করিয়া চলিতে ওস্তাদ। মেনশেভিকরা বলশেভিকদের ক্রমবর্দ্ধিত দাবীর বিরোধিতা করিতে লাগিলেন; ফলে ভেদ বৃদ্ধি পাইয়া অবশেষে দুই দল বিচ্ছিন্ন হইল। জারের ক্ষমতা তখন অপ্রতিহত। রাজনৈতিক আন্দোলন দমন ও কর্ম্মীদের নির্য্যাতন, নির্ব্বাসন, বহিষ্কার পূর্ণ প্রতাপে চলিতেছে। কলকারখানার মালিকেরা নিরুপায় শ্রমিকদিগের খাটাইয়া প্রভূত বিত্ত সঞ্চয় করিতেছে—এই সময় আদর্শের নামে বিরোধ ও ভেদ দেখিয়া অনেক বাস্তববাদী বিলাপ করিতে লাগিলেন; কিন্তু লেনিন টলিলেন না এবং ষ্ট্যালিনও সংশয়রহিত চিত্তে লেনিনের নেতৃত্বের উপর বিশ্বাস অটুট রাখিলেন। কারাগারে সত্য সংবাদ পাওয়া কঠিন। গুজব এবং অতিরঞ্জিত যে সব কাহিনী শোনা যায় বিষণ্ণ বন্দীজীবনের উপর তাহার প্রতিক্রিয়া যে কি দুর্ব্বিষহ ভুক্তভোগী ভিন্ন তাহা আর কেহই বুঝিতে পারিবেনা। এমনি চিন্তা সঙ্কটের মধ্যে পড়িয়া ষ্ট্যালিনের চিত্তে ঝড় উঠিল। তিনি বুঝিলেন তাঁহার কর্ম্মজীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্য চিরদিনের মত স্থির করিবার দিন আসিয়াছে। ষ্ট্যালিন অনুকূল প্রতিকূল যুক্তিগুলি চিন্তা করিতে লাগিলেন। সংস্কার সহজেই মানুষের মনকে মুগ্ধ করে।