পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

ইহার মধ্যে বিজ্ঞজনোচিত সতর্ক সাবধানতা আছে এবং মনে হয় কিছু বিলম্ব হইলেও রক্তপাত ব্যতীতই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে। কিন্তু দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি—যাঁহাদের সমাজ বিবর্তনের সহিত পরিচয় আছে, ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা হইতে তাঁহারা জানেন যে পরনির্ভরশীল সুবিধাবাদ ও আত্মপ্রত্যয়হীন সংস্কারপন্থা মরীচিকা মাত্র। এই মায়াজালে আটকাইয়া অনেকেই রাজনীতিক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতক সাজিয়াছে এবং ধ্বংস হত্যাকাণ্ডের সহায়ক হইয়াছে। স্তরে স্তরে নিয়মতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হওয়ার মনোবৃত্তি প্রতিক্রিয়াশীল রক্ষণশীলতা ছাড়া কিছুই নহে। ষ্ট্যালিন তাঁহার পথ বাছিয়া লইলেন।

 ষ্ট্যালিনের পলায়নের পর পুলিসের গুপ্তচরগণ তাঁহাকে বেড়াজালে ঘিরিয়া ফেলিল। ইতিমধ্যে—তিনি অন্ততঃ ছয়বার ধরা পড়িয়া পুলিসের চোখে ধূলি দিয়া পলাইয়া যান। ষষ্ঠবার পলায়ন করিয়া তিনি জর্জিয়ান মেনশেভিকদের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য্য শুরু করিলেন। ১৯০৪-০৫ এই সময় আমরা তাঁহাকে ককেসিয়ান্ বলশেভিক দলের নেতারূপে মেনশেভিক দলের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য্যে ব্যাপৃত দেখিতে পাই।

 একদিন একজন শ্রমিক তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল, “কমরেড্ সোসো, তুমি যাই বল দলের মধ্যে মেনশেভিকরাই সংখ্যায় বেশী।” ষ্ট্যালিন উত্তর দিলেন, “সংখ্যায় বেশী? আয়তন অপেক্ষা গুণ অনেক বড়। কয়েক বৎসর অপেক্ষা কর, দেখিবে কাহারা ভুল পথে চলিয়াছে আর কাহারা সত্য পথ বাছিয়া লইয়াছে।”

 জনৈক ঐতিহাসিক লিখিয়াছেন, “রাশিয়ান বলশেভিকদের সৌভাগ্য যে পনর বৎসর কাল তাহারা এইভাবে নৈষ্ঠিক শৃঙ্খলা রক্ষা করিয়া

২০