দুই
লেনিন সমাজতন্ত্রবাদকে ঢালিয়া সাজিলেন। গণ-বিপ্লবের পতাকাবাহী লেনিন দলের মধ্যে মতভেদ ও বিরুদ্ধতা দেখিয়া শঙ্কিত হইলেন না। একদিকে জার শাসনতন্ত্রের পীড়ননীতি অন্যদিকে মেনশেভিক দলের জোড়াতালি-দেওয়া মিলন-প্রচেষ্টা এ দুইকেই সহ্য ও উপেক্ষা করিয়া লেনিন বলশেভিক দলকে সঙ্ঘবদ্ধ ও শক্তিশালী করিয়া তুলিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। বাধা বিপত্তি প্রচুর, এমনকি সহকর্ম্মীরাও সংশয়সঙ্কুল। আদর্শ ও উদ্দেশ্যের সহিত কর্ম্মপন্থার সামঞ্জস্য হইল রাজনৈতিক দলের মিলনের ভিত্তি। যেখানে উহার অভাব সেখানে একটা সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে কল্পিত ঐক্য লইয়া সকলের সহিত মিলিয়া মিশিয়া কাজ করিতে গেলে পরিণাম শুভ হয় না। লেনিনের এই সিদ্ধান্ত ষ্ট্যালিন অপ্রতিবাদে মানিয়া লইলেন। অবশ্য কখনও কোন ক্ষেত্রে লেনিনের সহিত ষ্ট্যালিনের মতভেদ ঘটে নাই। অন্যদিকে দলের মধ্যে একদল লোক লেনিনের প্রতিবাদী হইয়া দাঁড়াইলেন। বিশেষভাবে মেনশেভিক ট্রট্স্কি তাঁহার বাগ্মীতা ও অনমনীয় দৃঢ়তা লইয়া লেনিনকে বাধা এবং তাঁহার মতবাদ খণ্ডন করিতে লাগিলেন। ট্রট্স্কির যুক্তি ছিল এই যে মতবাদ ও কর্ম্মপদ্ধতির অতিনিদিষ্টতা বলশেভিকদের পঙ্গু ও বন্ধ্যা করিয়া তুলিবে। ট্রট্স্কির মতে লেনিন শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে ভেদ ও আত্মকলহের প্রশ্রয় দিতেছেন। কিন্তু অসাধারণ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিপ্লবী লেনিন কিছুতেই কোন আপাত: সুবিধার জন্য মার্ক্সবাদকে বিকৃত করিতে সম্মত হইলেন না। সমসাময়িক কালে লেনিন একমাত্র ব্যক্তি যিনি মার্ক্সবাদকে বাস্তব ক্ষেত্রে যথাযথভাবে প্রয়োগ করিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ