পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

 “১৯০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ট্যামারফোর্সে (ফিন‍্ল্যাণ্ডে) বলশেভিক সম্মেলনে আমি প্রথম তাঁহার সাক্ষাৎলাভ করি। আমাদের দলের নভোচারী নেপক্ষী মহান্ নেতার সাক্ষাতের জন্য আমি উদগ্রীব। আমার মানসপটে তখন লেনিন কেবল মহান রাজনীতিক নহেন, বলিষ্ঠ দীর্ঘকায় সৌম্যকান্তি এক মহাপুরুষ। কিন্তু যখন দেখিলাম, আমার সম্মুখে একজন খর্ব্বকায় সাধারণ মানুষ দাঁড়াইয়া আছেন যাঁহার অবয়ব একান্ত বিশেষত্বহীন, তখন আমার বিস্ময়ের সীমা রহিল না।

 “সাধারণতঃ নেতারা অনেক বিলম্ব করিয়া সভায় আসেন যাহাতে জনমণ্ডলী তাঁহার আগমনের আশায় অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হইয়া থাকে এবং তিনি আসিবামাত্র চারিদিক হইতে রব উঠে ‘আসিয়াছেন, তিনি আসিয়াছেন, চুপ করুন চুপ করুন’। কিন্তু আমি দেখিলাম লেনিন অনেকের আগেই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন এবং এক কোণে একজন অতি সাধারণ প্রতিনিধির সহিত আলাপ করিতেছেন। নেতারা যে ভাবে সভায় গম্ভীরভাবে থাকেন তিনি নেতাসুলভ সেই সকল নিয়ম মোটেই মানিতেছেন না। লেনিনের এই সারল্য ও বিনয় দেখিয়া আমি মুগ্ধ হইলাম এবং দেখিলাম তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার মত ভঙ্গী দেখাইতেছেন না অথবা নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করিবার চেষ্টাও করিতেছেন না। নবীন মানব সমাজের তরুণ নেতার এই অনুপম অভিনবত্ব আমার দৃষ্টিতে মহান বলিয়া প্রতিভাত হইল।”

 এইভাবে রাশিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের এক যুবা বিপ্লবী উত্তর রাশিয়ার বহু বিস্তৃত কর্ম্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত নেতা লেনিনের সহিত প্রথম পরিচিত হইল। গুরু ও শিষ্যে প্রথম সাক্ষাৎ। বার বৎসর পরে যে দুই কর্মবীর ইউরোপের খণ্ডপ্রলয় হইতে মুমূর্ষু রাশিয়াকে উদ্ধার করিয়া নব সৃষ্টিতে

২৫