পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

ছিল সাহায্যের জন্য জারের নিকট আবেদনপত্র প্রেরণ করা। কিন্তু সাহায্যের প্রত্যুত্তরে তাহারা পাইল জারীয় সৈন্যগণের রাইফেল-নিঃসৃত বুলেট। নিরস্ত্র জনতার উপর এই নির্মম গুলিবর্ষণের সংবাদে সমস্ত ইউরোপ শিহরিয়া উঠিল। ৩০শে জানুয়ারী পারীর জনসভায় বিখ্যাত সাহিত্যিক আনাতোল ফ্রান্স বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলেন, “জার ক্ষুধিত নরনারীকে হত্যা করিয়াছেন, তাহারা চাহিয়াছিল খাদ্য, বিনিময়ে পাইয়াছে বুলেট; জার জারকেই হত্যা করিয়াছেন। যে নির্দ্দোষীর শোণিতে নাভা নদীর জল লোহিতবর্ণ হইয়াছে তাহার প্রতি শোণিত বিন্দু হইতে লক্ষ শির তুলিয়া মানুষ জাগিবে এবং এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোেধ লইবে। জার যে বিদ্রোহের অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করিলেন তাহা অত্যাচারীকে ধ্বংস করিবে। নিকোলাস আলেকজাণ্ডারের দিন ফুরাইয়াছে, জগতে তাহার স্মৃতি থাকিবে মাত্র। পাঁচ দিন ধরিয়া জারের গভর্ণমেণ্ট শ্রমিকদিগকে হত্যা করিতেছে এবং তাহাদের শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী নেতাদিগকে কারাগারে নিক্ষেপ করিতেছে। আমরা দেখিতেছি, যে বিপ্লব আরম্ভ হইল তাহা আর থামিবে না। দুঃখ এই ইহার রক্তাক্ত পথ যে দীর্ঘ হইবে না তাহা কে বলিবে? এ দৃশ্য ভয়াল, চমকপ্রদ; স্কুল কলেজ হইতে ছাত্ররা শিক্ষক সহ বাহির হইয়া আসিয়া জনসাধারণের সহিত জয় অথবা মৃত্যুর পথে যাত্রা করিতেছে। একটা জাতির মর্ম্মক্রন্দন বিশাল সাম্রাজ্যের বিস্তার হইতে উঠিয়া আকাশে আঘাত করিতেছে। রুশিয়াবাসীদের সংযত সাহস, প্রশংসনীয় সারল্য এবং মজ্জাগত সততা আজ জারের নৃশংস পাশবিকতার সম্মুখীন।”

 লেনিন নিশ্চয়ই নিশ্চেষ্ট ছিলেন না। তিনি এই বিপ্লবকে গণবিপ্লবে পরিণত করিতে চাহিলেন। সেণ্টপিটার্স‍্বার্গ, মস্কোর শ্রমিক ও ছাত্র

২৭