আমাদের মেনশেভিক সহকর্মীদের এই মত হয় যে, গণশক্তির আধিপত্যের পরিবর্ত্তে গণতন্ত্রী মধ্যশ্রেণীর প্রভুত্বেরই আমাদের এখন প্রয়োজন, তাহা হইলে, তাহার সরল অর্থ এই যে, আমরা সশস্ত্র অভ্যূত্থানের আয়োজনে কোন প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় অংশ গ্রহণ এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা হস্তগত করিবার চেষ্টা করিব না। ইহাই মেনশেভিকদের “কার্য্যক্রম”। অন্য দিকে প্রলেটারিয়েট যদি অনাগত বিপ্লবের পশ্চাতে না থাকিয়া সম্মুখের ভুমিকায় অভিনয় করে তাহা হইলে সে সশস্ত্র অভ্যূত্থানের আয়োজনের সক্রিয় দায়িত্ব এবং ক্ষমতা হস্তগত করার প্রচেষ্টা ত্যাগ করিতে পারে না। ইহাই বলশেভিকদের “কার্য্যক্রম”। গণশক্তির কর্ত্তৃত্ব স্থাপন না গণতন্ত্রী মধ্যশ্রেণীর আধিপত্য—দলের সম্মুখে ইহাই প্রশ্ন এবং এইখানেই আমাদের পার্থক্য।”
ষ্টকহলম কংগ্রেসে দেখা গেল, বলশেভিকদল সুসম্বদ্ধ এবং বিপ্লবের সাফল্যে বিশ্বাসী; পক্ষান্তরে মেনশেভিকদল নিয়মতান্ত্রিক সুবিধাবাদের পথে কালহরণের পক্ষপাতী। কিন্তু মেনশেভিকদলের সংখ্যাধিক্য হেতু লেনিনের প্রস্তাব গৃহীত হইল না। শ্রীমতী সেরাফিমা গোপ্নার নাম্নী জনৈকা মহিলা (যিনি রুশ বিপ্লবে একটা প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করিয়াছিলেন) লিখিয়াছেন,—“এই প্রথম আমি লেনিনকে পরাজিতের ভূমিকায় অভিনয় করিতে দেখিলাম। কিন্তু তিনি মোটেই দমিয়া যান নাই। ভবিষ্যতের জয়ের কথাই তিনি চিন্তা করিতেছিলেন। বলশেভিকরা একটু নিরুৎসাহ হইয়া পড়িয়াছিল। লেনিন তাহাদের উৎসাহ দিলেন,— ‘বিলাপ করিও না, একদিন আমরা জয়লাভ করিবই, কেননা আমাদের সিদ্ধান্ত অভ্রান্ত। বুদ্ধিজীবিদের নৈরাশ্যগুঞ্জন ঘৃণা কর, আমাদের স্বকীয় শক্তির উপর বিশ্বাস রাখ, জয়াশা সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হও।’ ঐ কথা বলিয়া