পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

দলের সাফল্য এই কংগ্রেসে স্বীকৃত হইল। শ্রীমতি গোপ‍্নার এই কংগ্রেসের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলিয়াছেন,—“...এই প্রথম আমি লেনিনকে বিজয়ীর ভূমিকায় দেখিলাম। কিন্তু জয়গর্ব্বে উন্মত্ত হইবার মত নেতা তিনি নহেন। এই জয় তাঁহাকে অধিকতর সাবধানী সতর্ক করিয়া তুলিল। আমরা কতিপয় প্রতিনিধি যখন তাঁহাকে ঘিরিয়া দাঁড়াইলাম তখন তিনি বলিলেন, প্রথমতঃ, আমরা যেন বিজয়ী হইয়াছি বলিয়া চীৎকার না করি। দ্বিতীয়তঃ আমাদের শত্রুকে ধ্বংস করিতে হইবে। বলিলেন, ‘মনে রাখিও শত্রু পরাজিত হইয়াছে মাত্র, ধ্বংস হয় নাই।’ যে সমস্ত লঘুচিত্ত প্রতিনিধিরা বলিতেছিলেন এইবার আমরা মেনশেভিকদিগকে শেষ করিয়াছি তিনি তাহাদিগকে ভর্ৎসনা করিলেন—‘লক্ষ্যে উপস্থিত হইবার পূর্ব্বে কাহারও গর্ব্ব করা উচিত নহে এবং লক্ষ্যে উপস্থিত হইলে গর্ব্ব করিবার কিছুই থাকে না।”

 “পরাজয়ে বিলাপ করিওনা, জয়ী হইয়াও উৎসাহে চীৎকার করিওনা” লেনিনের এই দুই মহাবাণী ষ্ট্যালিন বিপ্লবী মহলে বারংবার ধ্বনিত ও প্রতিধ্বনিত করিয়াছেন, সমাজতন্ত্রবাদের বিস্তৃতি ও বিকাশের পথে এবং সম্পূর্ণ নবীন সভ্যতা স্থাপনের সর্ব্বশেষ সংঘর্ষে এই দুই মহাবাণী প্রেরণা দিয়াছে।

 লণ্ডনের পঞ্চম কংগ্রেসে বলশেভিক পার্টি কর্ত্তৃক ষ্ট্যালিন বাকুতে স্থায়ীভাবে কাজ করিবার জন্য আদিষ্ট হইলেন। পুলিশ ও গোয়েন্দার দৃষ্টি এড়াইয়া স্থায়ীভাবে কাজ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হইত.না— কিন্তু ষ্ট্যালিন ১৮ মাস বিনা বাধায় কাজ করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন, ইহা কম কৃতীত্বের পরিচয় নহে। রাজনৈতিক কারণেই পার্টি ষ্ট্যালিনকেই বাকুর কার্যভার অর্পণ করিয়াছিলেন। তখন বাকু রাশিয়ার

৩৪