পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

রফায় শ্রমিকদের অনেক দাবী পূরণ হওয়ায়, তাহারা বলশেভিক নেতাদের অনুরক্ত হইয়া উঠিল। ১৯০৭ সালের শেষভাগে যখন সমগ্র রাশিয়ায় রাজনৈতিক অবসাদ দেখা দিয়েছে, তখন বলশেভিক কর্ম্মীদের নেতৃত্বে খনির মজুরেরা কেবল যে তাহাদের কতকগুলি দাবী আদায় করিতে সক্ষম হইয়াছিল তাহা নহে,—বলশেভিক পার্টির সমাজতান্ত্রিক বৈপ্লবিক চিন্তা ও কর্ম্মধারার তাহারাই হইয়াছিল অগ্রদূত।

 বাকুর শ্রমিককেন্দ্র, ভবিষ্যৎ রাশিয়ার কর্ণধার ষ্ট্যালিনের শিক্ষাগার। ১৯২৬ সালে টিফ‍্লিসের রেলওয়ে শ্রমিকদের সভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে ষ্ট্যালিন বলিয়াছিলেন,— “তৈলের খনি মজুরদের মধ্যে দুই বৎসর বৈপ্লবিক কার্য্য আমাকে বাস্তববাদী যোদ্ধা ও নেতারূপে গঠন করিয়া, তুলিয়াছিল। একদিকে বাকুর প্রগতিশীল শ্রমিকদের সহিত ঘনিষ্ট পরিচয়, অন্যদিকে মালিকদের সহিত শ্রমিকদের সংঘর্ষ—এই দুই হইতে আমি শিক্ষালাভ করিয়াছিলাম কি ভাবে বৃহৎ শ্রমিক সঙ্ঘকে পরিচালনা করিতে হয়। বাকুতেই আমি দ্বিতীবার বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষালাভ করিয়াছিলাম। এইখানেই আমি বিপ্লবের পথের যাত্রী হইয়াছিলাম।”

 জার-শাসনের স্বৈরাচার চরমে উঠিয়াছে, বৈধভাবে সংস্কারপন্থী রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালন করাও কঠিন। সেই অবস্থার মধ্যে পুলিশের শ্যেনদৃষ্টি এড়াইয়া বৈপ্লবিক গুপ্ত সমিতি গঠন এবং জার শাসনতন্ত্রকে চরম আঘাত হানিবার আয়োজন করিতে গিয়া, ষ্ট্যালিন সমসাময়িক অবস্থার সহিত সামঞ্জস্য বিধান করিয়া কখনও বৈধ কখনও বা গুপ্তভাবে—জনসাধারণকে মার্ক্স-লেনিনের বৈপ্লবিক মতবাদ শিক্ষা দিতে লাগিলেন। ১৯০৮ সালের মার্চ মাসে গোয়েন্দা পুলিশ ষ্ট্যালিনকে গ্রেফ‍্তার করিল। বাকুর বেইলভ জেলে তিনি ৮ মাস ছিলেন।

৩৫