তিন
ইউরোপের ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদের অসামঞ্জস্য ও স্ববিরোধিতা, সাম্রাজ্যভোগী ও সাম্রাজ্যলোভীর সংগ্রামকে আসন্ন করিয়া তুলিল। বিভিন্ন রাষ্ট্র সঙ্ঘবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়া যে বৈপ্লবিক গণশক্তি আন্তর্জাতিক মহারাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখিতেছিল— নেতাদের দুর্ব্বলতায় সে স্বপ্ন ভাঙ্গিয়া গেল। জাতির বিরুদ্ধে জাতির জিঘাংসাপ্রবৃত্তি রণোন্মাদনায় রক্তপিপাসু হইয়া উঠিল। ১৯১৪ খৃষ্টাব্দের ১লা আগষ্ট জার্ম্মান সম্রাট রুশিয়ার বিরুদ্ধে, ৩রা আগষ্ট ফ্রান্সের বিরুদ্ধে, ৪ঠা আগষ্ট বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিলেন। ৪ঠা আগষ্ঠ ইংলণ্ড জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিল। ৬ই আগষ্ট অস্ট্রিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিল; ১১ই আগষ্ট ফ্রান্স ও ইংলণ্ড অষ্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিল। সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল, রাশিয়া ও পশ্চিম ইউরোপের সুবিধাবাদী সমাজতন্ত্রী দলগুলি স্বদেশপ্রেমের নামে স্ব স্ব দেশের গভর্ণমেণ্টকে সমর্থন করিতে লাগিল।
এই সময়ে লেনিন গ্যালিসিয়ায় পোরোনিনো গ্রামে অবস্থান করিতে ছিলেন। স্থানীয় অস্ট্রিয়ান কর্তৃপক্ষ তাঁহাকে রুশ গুপ্তচর সন্দেহে গ্রেপ্তার করিল। অস্ট্রিয়ার কয়েকজন প্রতিপত্তিশালী সমাজতন্ত্রী গভর্ণমেণ্টকে বুঝাইলেন যে লেনিন একজন আন্তর্জাতিক বিপ্লবী এবং রাশিয়ার জারতন্ত্রের চিরশত্রু। তিনি কখনও রুশ সাম্রাজ্যবাদীদের চর হইতে পারেন না! দুই সপ্তাহ কারাদণ্ড ভোগ করিয়া তিনি মুক্তি লাভ করিলেন এবং সুইজারল্যাণ্ডে যাইবার অনুমতি লাভ করিলেন। ৫ই সেপ্টেম্বর হইতে ১৯১৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্য্যন্ত দেড় বৎসর কাল তিনি সুইজারল্যাণ্ডের