বুদ্ধিজীবিরা মিলিয়া একটা নূতন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূচনা করিলেন। প্রিন্স লোভফ অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট স্থাপন করিলেন, কিন্তু আসলে যুবক ব্যবহারজীবী কেরেনেস্কীই হইলেন এই গভর্ণমেণ্টের কর্ণধার। ইহার বাগ্মিতা ছিল অসাধারণ; রাজনৈতিক চিন্তায় বৈপ্লবিক হইয়াও ইঁহার কোন নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না। রাষ্ট্রের কর্ত্তৃত্ব গ্রহণ করিয়া ইনি ঘোষণা করিলেন—“আমি রাশিয়াকে ইউরোপের মধ্যে স্বাধীনতম রাষ্ট্রে পরিণত করিতে চাহি।” কেরেনেস্কী গভর্ণমেণ্ট সর্ব্ববিধ রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিবার আদেশ দিলেন।
মুক্তি পাইবামাত্র ষ্ট্যালিন পেট্রোগ্রাডে আসিয়া উপস্থিত হইলেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে সহরের বলশেভিক শ্রমিক পার্টির বৈপ্লবিক কর্ম্মধারা পরিচালনা করিতে লাগিলেন। ১৮ই মার্চ্চ পুনরায় “প্রাভ্দা” পত্রিকা প্রকাশিত হইল। ষ্ট্যালিন সম্পাদকীয় প্রবন্ধে লিখিলেন,—
“পুরাতন শক্তিকে ধ্বংস করিতে বিদ্রোহী শ্রমিক ও সৈনিকের সাময়িক ঐক্যই যথেষ্ট; কেননা, সৈনিকের পোষাক পরিহিত রাশিয়ান শ্রমিক ও কৃষকের ঐক্যই যে রুশ-বিপ্লবের ভিত্তি ইহা স্বতঃসিদ্ধ।
“কিন্তু শ্রমিক এবং সৈনিকের অস্থায়ী মৈত্রী অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা অথবা বিপ্লবকে অধিকতর পরিণতির দিকে অগ্রসর করিবার পক্ষে আদৌ পর্য্যাপ্ত নহে।
“ইহার জন্য প্রয়োজন—এই মৈত্রীকে সচেতন, নিরাপদ, স্থায়ী এবং দৃঢ় করিতে হইবে। এমন দৃঢ় করিতে হইবে যাহা প্রতিবিপ্লবীদের প্ররোচনাতেও অটল থাকিবে। ইহ। সকলের সম্মুখেই স্পষ্ট যে, রাশিয়ান বিপ্লবকে চরম জয়যুক্ত করিতে হইলে বিপ্লবী শ্রমিক ও বিপ্লবী সৈনিকদের ঐক্যকে দৃঢ়তর করা প্রয়োজন।