বিপ্লবীদের প্রত্যাবর্ত্তনের পথ দিতে প্রস্তুত ছিলেন না। রাশিয়ার অস্থায়ী গভর্ণমেণ্টণ্টও প্রবাসী “জরাজীর্ণ” বলশেভিকদের রাশিয়ায় প্রবেশ করিতে দিতে আগ্রহশীল ছিলেন না। এদিকে পেট্রোগ্রাড হইতে আহ্বান আসিতে লাগিল, লেনিনের উপস্থিতি অবিলম্বে প্রয়োজন। লেনিন জার্ম্মান গভর্ণমেণ্টের সহিত সুইস সোশ্যাল ডেমোক্রাট ফ্লিটজ প্ল্যাটেনের মারফং কথাবার্ত্তা চালাইতে লাগিলেন। অবশেষে সুইজারল্যাণ্ডের জার্ম্মান রাষ্ট্রদূত ও প্ল্যাটেনের মধ্যে চুক্তি হইল—(১) যুদ্ধ সম্বন্ধে যাহার যে মতই হউক না কেন, সমস্ত প্রবাসী রাশিয়ানকে যাইবার অনুমতি দেওয়া হইবে; (২) যে রেলগাড়ীতে ইহারা যাইবে প্ল্যাটেনের অনুমতি ব্যতীত সেই গাড়ীতে আর কাহাকেও ভ্রমণ করিতে দেওয়া হইবে না। ছাড়পত্র বা লাগেজ পরীক্ষা করা হইবে না; (৩) যাত্রীরা রাশিয়ায় গিয়া নির্দ্দিষ্টসংখ্যক জার্মান বন্দীর মুক্তির জন্য আন্দোলন করিবে।
চুক্তি স্বাক্ষরিত হইবামাত্র লেনিন সন্ত্রীক, জিনোভিফ্, রাডেক প্রভৃতি ৩০ জন সঙ্গীসহ যাত্রা করিলেন। বার্লিন হইয়া লেনিন সদলবলে সুইডেনের ষ্টক্হলমে উপস্থিত হইলেন। ফিনল্যাণ্ডের মধ্য দিয়া ১৬ই এপ্রিল লেনিন পেট্রোগ্রাডে প্রবেশ করিলেন। সহস্র সহস্র শ্রমিক, সৈনিক, নাবিক ষ্টেশনে লেনিনকে বিপুলভাবে অভ্যর্থনা করিল। জনসমুদ্রবেষ্টিত লেনিন অভ্যর্থনার উত্তরে বলিয়া উঠিলেন—“জগদ্ব্যাপী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব দীর্ঘজীবী হউক।”
পেট্রোগ্রাডে বলশেভিক সম্মেলনে লেনিন তাঁহার কার্য্যক্রম ঘোষণা করিলেন। ২০শে এপ্রিল উহা ‘প্রাভ্দায়’ প্রকাশিত হইল। মধ্যশ্রেণীর বিপ্লবকে কৃষক-শ্রমিক বিপ্লবে পরিণত করিয়া এখনই সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে এই প্রস্তাবে তুমুল তর্কের তুফান উঠিল। সকলের