ষ্ট্যালিন
সৈন্যদল গঠন ও পরিচালনে তাঁহার লক্ষ্য থাকিত, শত্রুর বিরুদ্ধে সর্ব্বাপেক্ষা মারাত্মক কৌশল অবলম্বন করা।” যেখানে লালপল্টন দ্বিধাগ্রস্ত হইয়াছে প্রতি-বিপ্লবীদল কিছু সাফল্য অর্জ্জন করিয়াছে সেইখানেই ষ্ট্যালিন উপস্থিত হইয়া তাহা প্রতিষেধ করিয়াছেন। এই কালে তাঁহার রাত্রিতে নিদ্রা ছিলনা, দিনে বিশ্রাম ছিল না; অবিশ্রান্ত ভ্রমণ করিয়া তিনি ক্ষুধিত, রসদ ও সরঞ্জামহীন লালপণ্টনকে উৎসাহে সঞ্জীবিত রাখিয়াছেন। অতিরিক্ত উৎসাহী ট্রট্স্কী যেখানেই গোলমাল বাধাইয়া তুলিতেন সেইখানেই ষ্ট্যালিনকে যাইতে হইত। ষ্ট্যালিন একদা বিদ্রূপ করিয়া বলিয়াছিলেন, “সৈন্য বিভাগের অজিয়ান্ আস্তাবল সাফ, করিবার আমি একজন বিশেষজ্ঞ বলিয়া বিবেচিত হইতাম।”
এই দুই বৎসরে ষ্ট্যালিন, ভরোশিলভ ও মিনিনকে সঙ্গে লইয়া জারিথসিন্ রক্ষা করিলেন এবং ঝেরঝিনিস্কির সহিত পেট্রোগাড সীমান্তে গিয়া প্রেমে বিদ্রোহী সেনাপতি জুডিনিচের অগ্রগতি রোধ করিলেন। পশ্চিম সীমান্তে পোলাণ্ডেও তাঁহার কার্যকারিতা দেখা গেল। দক্ষিণ রাশিয়ায় জেনারেল ডেনিকিনের বিরুদ্ধে এবং জেনারেল র্যাঙ্গেলের বিরুদ্ধেও তাঁহাকে আমরা সৈন্য পরিচালনা করিতে দেখিতে পাই।
১৯১৮ খৃষ্টাব্দে রাশিয়ার ভয়াবহ অবস্থা কল্পনাতেও আনা যায় না। বহু যুদ্ধক্ষেত্র ধ্বংস ও মৃতদেহে, সমাকীর্ণ এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরে মেনশেভিক প্রতিবিপ্লবী দলের ষড়যন্ত্র। মস্কৌ সহরে রিভলিউশনারী সমাজতন্ত্রীদল মাথা তুলিবার উপক্রম করিতেছে। উরাল পর্ব্বতমালায় সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত চেক্ সৈন্যগণ বিপ্লবের বিরোধিতা করিবার জন্য সুসজ্জিত হইতেছে। দক্ষিণে বাকুর তৈল খনি অধিকার করিবার জন্য ইংরাজেরা অগ্রসর। যখন চারিদিকে আগুণ জ্বলিয়া উঠিয়াছে তখন ষ্ট্যালিন
৬৭