ষ্ট্যালিন
বিনা প্রমাণে বা অল্প প্রমাণে প্রতি-বিপ্লবী বলিয়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিনি দণ্ড হইতে রক্ষা করিয়াছেন।
ইউরোপের এই দুঃসময়ে যখন এক একটা জাতির ভাগ্য কূটনীতিবিশারদগণের ক্রীড়াকন্দুকে পরিণত, যখন মানুষের ধন, মান, জীবনের কোন মূল্য নাই, যখন মানুষ ইচ্ছায় হউক, অনিচ্ছায় হউক, এক মহা ঘুর্ণিপাকে পড়িয়া বিব্রত, সামাজ-সংহতি বিশ্লিষ্ট, ন্যায়-নীতি-দয়া-ধর্ম্ম পদদলিত, তখন মনুষ্য-জীবনের মূল্য কতটুকু? সামান্য সন্দেহে “তরাসে নিষ্ঠুর” মানুষ মানুষের প্রাণ লইতে অনুমাত্র দ্বিধা করিত না। সেই পটভূমিকার দিক হইতে যদি আমরা সমাজতন্ত্রবাদকে বিচার করি, তাহা হইলে দেখিব সেই দুর্দ্দিনেও কম্যুনিষ্টরা বৃহৎ মনুষ্যত্বের দাবী ভোলেন নাই। মানুষের দুঃখ-দৈন্যকে তাঁহারা লাঘব করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। মনুষ্য-জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাবশতঃই তাঁহারা এক শ্রেণীর লোককে অন্যায় হইতে বিরত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। একটী লোককে আঘাত করিয়া সহস্র বা লক্ষ লোকের জীবন রক্ষা এবং ভবিষ্যতে এমন সমাজ-ব্যবস্থা পত্তন করা যেখানে মানুষ-মানুষ শিকার করিবেনা অথবা মানুষকে ব্যক্তিগত দাসে পরিণত করিবেনা, ইহাই ছিল ষ্ট্যালিনের লক্ষ্য।
বিপ্লব বিনা রক্তপাতে হয় না। ইতিহাসে প্রত্যেক বিপ্লবই নরশোণিতস্নাত ফরাসী বিপ্লব নৃশংসতায় নিষ্ঠুরতায় নির্ম্মম হইয়াও ঊনবিংশ শতাব্দীতে মানুষকে শান্তি ও মুক্তির পথ প্রদর্শন করিয়াছিল। রুশবিপ্লবও তাহার শত্রুকে নির্ম্মম হস্তে দমন করিয়াছে। আর এক দিকে সে কৃষক ও শ্রমিকদিগকে শতাব্দীচয়ব্যাপী দাসত্বের নৈরাশ্য হইতে উদ্ধার করিয়াছে! ১৯৩১ সালের শেষ ভাগে ষ্ট্যালিন লিখিয়াছেন, “যখন বলশেভিকরা শাসনভার হাতে লইল তখন হইতেই
৮০