পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষ্ট্যালিন

সংস্কৃতি বিস্তারের সম্পূর্ণ সুযোগ, জাতীয় অনৈক্যের অতীত ব্যবস্থার ক্রমধ্বংস সাধন এবং প্রগতিশীল জাতিগুলি কর্ত্তৃক অপেক্ষাকৃত দুর্ব্বল জাতিগুলিকে সর্ব্বপ্রকারে সাহায্যদান।’

 মার্কসীয় সমাজতন্ত্রবাদের আদর্শে রাষ্ট্রগঠন করিতে গিয়া লেনিন দেখিলেন, নূতন অর্থ নৈতিক ব্যবস্থা পত্তন করা ব্যতীত এই ছত্রভঙ্গ রাষ্ট্রের পুনর্গঠন অসম্ভব। রাষ্ট্রবিপ্লবে, দুর্ভিক্ষে প্রাচীন ব্যবস্থা ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। কৃষি-শিল্প-বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ নূতন ভিত্তির উপর স্থাপন করিতে হইবে। দল প্রথমতঃ যে ভাবে কার্য্য করিতে আরম্ভ করিয়াছিল লেনিন তাহা পরিবর্ত্তন করিলেন। দেশব্যাপী অসন্তোষ এবং বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়া কাজ করা সহজ ছিল না।

 ১৯১৪-র সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে রাশিয়াকে ৫৬ হাজার কোটী টাকা বায় করিতে হইয়াছিল এবং কার্যক্ষম পুরুষদের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ যুদ্ধে হতাহত হয়। কলকারখানার উৎপাদন এবং যানবাহনের ব্যবস্থা ১৯১৩ খৃষ্টাব্দের তুলনায় পাঁচ কি ছয় ভাগের অধিক ছিল না এবং প্রতি-বিপ্লবী যুদ্ধেও প্রায় ৭০ হাজার কোটী টাকা নষ্ট হয়। উল্লেখযোগ্য বড় বড় কারখানা ধ্বংস হইয়াছিল এবং অকর্ষিত কৃষিক্ষেত্র আগাছায় ভরিয়া গিয়াছিল। শাসনব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের সমস্ত বিভাগই বিপর্য্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। বিজয়ী লালপল্টনের হাতে রাইফেল ছিল না, পায়ে জুতা ছিল না, অর্দ্ধাহার, অনশন সম্বল ছিল। নূতন রাষ্ট্র চারিদিক হইতে আক্রান্ত এবং ইউরোপব্যাপী বয়কটের সম্মুখীন। গৃহযুদ্ধের সময় রুশ সাম্রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন ও বিভক্ত করিতে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলিকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করিতে প্ররোচনা দিতে ইউরোপীয় কূটনীতিকেরা চেষ্টার ত্রুটি করেন নাই।

৮৫