ষ্ট্যালিন
স্বাস্থ্য লাভার্থ ককেশিয়ায় প্রেরণ করিলেন। আমরা পূর্ব্বেই ইঙ্গিত করিয়াছি যে ষ্ট্যালিনের সহিত ট্রট্স্কি ১৯১৭ খৃষ্টাব্দ হইতেই মতভেদ ছিল। ষ্ট্যালিন ছিলেন সর্ব্বতোভাবে লেনিনের অনুগামী, পক্ষান্তরে ট্রট্স্কি ছিলেন সমালোচক। ষ্ট্যালিন ছিলেন কর্মবীর আর তীক্ষ্ণধী, ট্রট্স্কি ছিলেন বাক্যবীর। সরকারী কাগজপত্রে ট্রট্স্কী ও ষ্ট্যালিনের মতভেদের অনেক প্রমাণ আছে। সে যাহা হউক, লেনিনের প্রথর ব্যক্তিত্ব ক্ষমতালোভী ট্রট্স্কিকে বহুলাংশে সংযত রাখিত। ষ্ট্যালিনের অনুপস্থিতির সুযোগ লইয়া ট্রট্স্কি নিজের মর্যাদা বৃদ্ধি করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। রুগ্ন লেনিনের মৃত্যুর পর তাঁহার শূন্য স্থান গ্রহণ করিবার জন্য ট্রট্স্কি প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। লেনিন তাহা বুঝিতে পারিয়া চিন্তিত হইলেন।
স্বাস্থ্যলাভ করিয়া ষ্ট্যালিন লেনিনের শয্যাপার্শ্বে ফিরিয়া আসিলেন। আত্মাভিমানী ট্রট্স্কির মত তাঁহার কোন বাহ্য আড়ম্বর ছিলনা এবং তিনি কোন উচ্চাশাও পোষণ করিতেন না। লেনিন ও বলশেভিক দলের সেবার মধ্যেই ষ্ট্যালিন আপনাতে আপনি মগ্ন হইয়া থাকিতেন। ট্রট্স্কি-শ্রেণীর নেতাদের মত তিনি কখনও কোনদিন লেনিনের প্রতিবাদ বা সমালোচনা করেন নাই। অথচ ট্রট্স্কি পদে পদে নিজের বুদ্ধির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্ন করিবার জন্য লেনিনের প্রতিবাদ ও সমালোচনা করিতেন। এই কারণে ষ্ট্যালিন ট্রট্স্কির ঔদ্ধত্যকে কখনও ক্ষমা করিতে পারেন নাই। অন্যদিকে ট্রট্স্কি ষ্ট্যালিনকে বড় বেশী গণনার মধ্যেই আনিতেন না। এমনকি লেনিনের প্রস্তাবে ষ্ট্যালিন যখন কম্যুনিষ্ট পার্টির সম্পাদক নির্ব্বাচিত হইলেন, ট্রট্স্কিও তাহা সমর্থন করিয়াছিলেন। লেনিনের রোগশয্যার পার্শ্বে দাঁড়াইয়া
৯১