বেধেছিল— টাকাকড়ি-সমেত আমার ব্যাগটি জাহাজের ক্যাবিনে ফেলে এসেছিলুম। তাতে করে সংসারের আকৃতির হঠাৎ অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হোটেল থেকে অবিলম্বে জাহাজে ফিরে গিয়ে সেটি সংগ্রহ করে এনেছি। এই ব্যাগ ভুলে যাবার সম্ভাবনা কাল চকিতের মতো একবার মনে উদয় হয়েছিল। মনকে তখনি সাবধান করে দিলুম, ব্যাগটি যেন না ভোলা হয়। মন বললে, খেপেছ! আমাকে তেমনি লোক পেয়েছ।— আজ সকালে তাকে বিলক্ষণ একচোট ভর্ৎসনা করেছি; সে নতমুখে নিরুত্তর হয়ে রইল। তার পর যখন ব্যাগ ফিরে পাওয়া গেল তখন আবার তার পিঠে হাত বুলোতে বুলোতে হোটেলে ফিরে এসে, স্নান করে বড়ো আরাম বোধ হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে আমার স্বাভাবিক বুদ্ধির প্রতি কটাক্ষপাত করে পরিহাস করবেন, সৌভাগ্যক্রমে এমন প্রিয়বন্ধু কেউ উপস্থিত নেই। সুতরাং রাত্রে যখন কলিকাতামুখী গাড়িতে চড়ে বসা গেল তখন, যদিও আমার বালিশটা ভ্রমক্রমে হোটেলে ফেলে এসেছিলুম, তবু আমার সুখনিদ্রার বিশেষ ব্যাঘাত হয় নি।
পাতা:সংকলন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯২
সংকলন
ভাদ্র-কার্তিক, ১২৯৮