পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

υή ο বেনেভোলেণ্ট ইনষ্টিটিউশন। দুইটিই বিনামূল্যে বিষ্ঠাশিক্ষার উদ্দেশ্বে স্থাপিত হয়। দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, কালীনাথ রায় প্রভৃতির নাম হিন্দু ফ্রি স্কুলের সাহায্যদাতাদের মধ্যে পাই, এবং জোড়ার্সাকোর রাধানাথ পাল, মাধবচন্দ্র মল্পিক প্রভৃতি উহার পরিচালক ছিলেন । এই বিদ্যালয়টির উদ্দেশ্য ছিল ধৰ্ম্মবিষয়ক মোহ দূরীকরণ । ৫২ পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত একটি পত্রে মাধবচন্দ্র মল্লিক লেখেন,— যে অযুক্ত ধৰ্ম্মের শৃংখলে বহুকালাবধি আমারদের মন বদ্ধ আছে তাহা দৃঢ়করণে যদ্যপি অামারদিগের অভিপ্রায় থাকিত তবে আমরা কখন হিন্দু ফ্রি স্কুল স্থাপন করিতাম না । অপর বিদ্যালয়টি বিশেষ করিয়া হিন্দু বালকদিগকে বিনা-বেতনে শিক্ষা দিবার জন্য স্থাপিত হয় । মহারাজ কালীকৃষ্ণ বাহাদুর উহার পরিদর্শক ছিলেন । সে-যুগের প্রায় সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিই ইহার সাহায্য করিয়াছিলেন । 3. ১৩৩ পৃষ্ঠায় কলিকাতার যে-সব বিদ্যালয়ে ইংরেজী পড়ান হইত তাহাদের ছাত্র-সংখ্যা সম্বন্ধে একটি সংবাদ দেওয়া হইয়াছে । ইহা হইতে কিরূপ মুষ্টিমেয় লোক সে-যুগে স্কুলে বিদ্যাশিক্ষা করিবার স্থযোগ পাইত, তাহ বুঝিতে পারা যায়। সেকালেও বাংলা দেশে কলিকাতাই সব বিষয়ে অগ্রণী ছিল, এবং কলিকাতায় ষেজিনিসের প্রচলন হইত, তাহা মফস্বলে ছড়াইয়া পড়িতে বেশী সময় লাগিত না । এ কথা কি শিক্ষা, কি আমোদ-প্রমোদ, কি পোষাক-পরিচ্ছদ, সকল বিষয়েই খাটে । স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা বিষয়েও ইহার বহু প্রমাণ আমরা পাই । কলিকাতায় ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে মফস্বলেও বহু বিদ্যালয় স্থাপিত হইতে আরম্ভ হয়। ৬৩-৮৯ পৃষ্ঠায় অনেকগুলি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংবাদ পাওয়া যাইবে । ইহাদের মধ্যে টাকী ও মুর্শিদাবাদ– এই দুই জায়গায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিস্তৃত বিবরণ এই অংশে আছে । ৬৮ পৃষ্ঠায় প্রদত্ত একটি সংবাদ হইতে জানা যায়, গবর্নর-জেনারেল লর্ড অকল্যাণ্ড নিজব্যয়ে চানক বা বারাকপুরে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন । ৭২ পৃষ্ঠাতে যে-পত্রটি উদ্ধৃত করা হইল, উহা হইতে মিশনরী স্কুল সম্বন্ধে কিছু কিছু তথ্য পাওয়া যায়। পত্র-লেখকের মিশনরী স্কুল সম্বন্ধে উচ্চ ধারণা ছিল না, কারণ তিনি লিথিয়াছেন,— পরস্তু তালপাত কলাপাত ইত্যাদি লেখা পড়া পূৰ্ব্বে যে প্রকার হইত ঐ পাঠশালায়ও সেইপ্রকার হইয়াছে পূৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক বিদ্যা কাহার দেখা যায় নাই অধিকন্তু এই কেবল কতকগুলিন মুটে মজুর পোদ বাগদীর ছেল্যেরা পাদরি সাহেবের প্রসাদাৎ দোয়াইৎ কলম স্পশ করিয়াছে মাত্র বিযয়কৰ্ম্মকরণোপযুক্ত লেখা পড়া শিক্ষা হয় নাই এবং লেখাপড় করিয়াছিল এই অভিযানে ও অনভ্যাস বশে মজুরী বা রাখালী করে না এই প্রকার অনেকের দুইকুল গিয়াছে । ইহার পরই হুগলীতে একটি বড় পাঠশাল স্থাপিত হইবে এই সংবাদ দিয়া পত্ৰলেখক বলিতেছেন,— বোধ হয় ইহাতেই পাদরি সাহেবের পাঠশালার কিচির মিচির রহিত হইবেক ।