ভূমিকা ‘সমাচার দর্পণের প্রথমাবস্থায় সম্পাদকীয়-বিভাগে ছিলেন পণ্ডিত জয়গোপাল তর্কালঙ্কার। এই কাজ ত্যাগ করিয়া তিনি ১৮২৪ সনে কলিকাতা সংস্কৃত কলেজে কাব্যের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৮৩৬, ২রা জুলাই তারিখে ‘সমাচার দর্পণ-সম্পাদক লিখিয়াছিলেন :– ঐযুক্ত জয়গোপাল তর্কালঙ্কার.পূৰ্ব্বে অনেক কালাবধি দর্পণ সম্পাদনানুকূল্যে নিযুক্ত ছিলেন এইক্ষণে দশ বৎসর হইল কলিকাতার গবর্ণমেণ্টের প্রধান সংস্কৃত বিদ্যামন্দিরে কাব্যাধ্যাপকতায় নিযুক্ত আছেন । ইহার পর পণ্ডিত তারিণীচরণ শিরোমণি চার বৎসর ‘সমাচার দর্পণ"-সম্পাদনে সহায়তা করিয়াছিলেন। ১৮২৮ সনের জুন মাসে তাহার মৃত্যু হইলে পরবর্তী ৫ই জুলাই তারিখের কাগজে সম্পাদক লিখিয়াছিলেন :– পণ্ডিত তারিণীচরণ শিরোমণি-সংস্কৃত ব্যাকরণ ও সাহিত্যাদি শাস্তুে অতিশয় ব্যুৎপন্ন এবং ইঙ্গরেজী ও হিন্দী ও বাঙ্গল ও নানাদেশীয় ভাষা ও লিপিতে বিদ্বান ছিলেন ।.গত চারি বৎসরের মধ্যে আমারদের সমাচার দর্পণ কি ছাপাখানার অন্য২ পুস্তকে যে সকল শব্দ বিদ্যাসের রীতি ও ব্যঙ্গোক্তি দ্বারা লিখনের পারিপাট্য তাহ কেবল তৎকতৃক প্রকাশিত হইয়াছে । বিশেষতঃ বালককালাবধি এই কৰ্ম্মে নিযুক্ত হওয়াতে তৰ্জমাকরণে শীঘ্রকারী এবং ছাপাখানার অন্তং কৰ্ম্মে অত্যন্ত পারক হইয়াছিলেন । ১৮১৭ সনে কলিকাতায় হিন্দুকলেজ-প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এদেশের লোকের মধ্যে ইংরেজী শিখিবার সাড়া পড়িয়া যায়। এই কারণে শ্রীরামপুর মিশন ১৮২৯ সনের ১১ই জুলাই হইতে ‘সমাচার দপণ’কে দ্বিভাষিক ( বাংলা ও ইংরেজী ) করিবার ব্যবস্থা করিলেন। ১১ জুলাই ১৮২৯ তারিখের সংখ্যায় দেখিতেছি,— পাঠকবর্গেরদের প্রতি বিজ্ঞাপন। সমাচারদর্পণ প্রকাশক এগার বৎসরের অধিক কালাবধি কেবল বাঙ্গল ভাষায় এই কাগজ প্রকাশকরণানন্তর বর্তমান তারিখ অবধি সম্বাদ ইঙ্গরেজী ও বাঙ্গল ভাষায় প্রকাশ করিতে মনস্থ করিয়াছেন ।...বাঙ্গল। তৰ্জমায় মূল কথার ভাব থাকিবে কিন্তু তাহা এতদেশীয় পদ্যের সহিত ঐক্য থাকিবে । প্রকাশক এই ভরসা করেন যে যাহার সম্বাদপ্রাপণেচ্ছুক আছেন কেবল যে তাহারদের উপকারক এমত নহে কিন্তু যাহার। ইঙ্গরেজী ভাষা শিক্ষাকরণবিষয়ে ব্যগ্র আছেন তাহারদেরও উপকার দর্শিবে । কলিকাতাস্থ এতদ্দেশীয় সমাচারপত্র হইতে যাহা বাচনা করিয়া লওয়া যাইবে তাহাকেও ইঙ্গরেজী পরিচ্ছদ দেওয়া যাইবে । এ-পর্য্যস্ত ‘সমাচার দর্পণ কেবল প্রতি শনিবারে প্রকাশিত হইতেছিল, কিন্তু ১৮৩২ সন হইতে সপ্তাহে দুইবার প্রকাশ করা আবশ্বক বোধ হইল । অতিরিক্ত ‘দপণের প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হইল—১১ই জানুয়ারি, ১৮৩২, বুধবার। কিন্তু এই অতিরিক্ত সংস্করণ বেশী দিন স্থায়ী হয় নাই। সংবাদপত্রের ডাকমাশুল বৃদ্ধি হওয়াতে ১৮৩৪ সনের ৮ই নবেম্বর হইতে ‘সমাচার দর্পণ পুনরায় সাপ্তাহিক আকারে প্রতি শনিবার প্রকাশিত হইতে লাগিল । ১৮৪০ সনের ১লা জুলাই হইতে ‘ফ্রেণ্ড অব ইণ্ডিয়া’ ও ‘সমাচার দর্পণ-সম্পাদক মার্শম্যান সাহেবের উপর অন্য একখানি নূতন সাপ্তাহিক পত্র গবর্ণমেণ্ট গেজেট’-এর সম্পাদনভারও
পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা প্রথম খণ্ড.djvu/২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।