之8 ভূমিকা ব্যঙ্গচিত্রের সূত্রপাত হয় নাই। উদ্ধৃত সামাজিক চিত্রগুলি উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের বাঙালী সমাজের। এগুলি যে পরবর্তী যুগে ‘আলালের ঘরের দুলালে’ এবং অন্য পুস্তকে অনুকৃত হইয়াছে, তাহা বুঝিতে এখন আর কাহারও অস্থবিধা হইবে না। নূতন বাবুদের কথা-বলার ভঙ্গী, বাঙালী ছেলেদের ইংরেজী পোষাক পরা, ইংরেজী প্রথায় নাম লেখা, এরূপ কতকগুলি বিষয় সম্বন্ধে ব্যঙ্গরচনা কয়েকটি বিশেষ কৌতুকপ্রদ। ইহা ছাড়া অন্যান্ত আচারব্যবহার সম্বন্ধেও অনেক সংবাদ এই অংশে পাওয়া যাইবে । ইহার পরে সে-যুগের আমোদ-প্রমোদ সম্বন্ধে বহু সংবাদ বিন্যস্ত করা হইয়াছে । তখনও বাঙালীর আমোদ-প্রমোদ সেকালের ধরণেরই ছিল,—যেমন নাচ, সং, যাত্রা, কবির লড়াই, কুস্তী ইত্যাদি । এই প্রত্যেকটি বিষয়েই কিছু-না-কিছু তথ্য এই খণ্ডে পাওয়া যাইবে । ১৩৭-৩৮ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত বিবরণ হইতে আমরা জানিতে পারি যে আমাদের দেশে দুর্গাপূজায় যে সমারোহ হয়, উহা খুব বেশী দিনের ব্যাপার নয়, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রই প্রথমে এইরূপ সমারোহ করেন। কাহাকেও খুব ধনী বলিয়া জানিলে নবাবের টীকা লইয়া যাইবেন এই ভয়ে মুসলমান আমলে এদেশের জমীদারেরা ধুমধাম করিয়া নিজেদের ঐশ্বৰ্য্য দেখাইতে সাহস পাইতেন না । পরে ব্রিটিশ আমলে লোকে আশ্বস্ত হইয়া ধনসম্পত্তি দেখাইতে আর ভীত হইল না । এই অংশ হইতে আর একটি খুব নূতন ধরণের সংবাদও আমরা জানিতে পারি। গত কয়েক বৎসরের মধ্যে আমাদের দেশে বালিকাদের মধ্যেও শরীর-চর্চা প্রবর্তিত হইয়াছে দেখিয়া সকলেই আনন্দিত হইয়াছেন । ইহা নূতন জিনিষ নয়। এক শত বৎসর আগেও এদেশে বালিকাদের ব্যায়াম প্রচলিত ছিল । ১৪৭ পৃষ্ঠায় বালিকাদের কুস্তী সম্বন্ধে একটি সংবাদ দেওয়া হইয়াছে। ‘সমাচার দর্পণে যে-কয়েকটি দান ও জনহিতকর প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সংবাদ প্রকাশিত হইয়াছিল, তাহ পরবর্তী কয়েকটি পৃষ্ঠায় দেওয়া হইয়াছে। তখনই যে আমাদের দেশে বন্যা বা অন্যান্য দুৰ্দৈবগ্রস্ত লোকদের সাহায্যের জন্য চাদ করিয়া টাকা তোলা আরম্ভ হইয়াছিল তাহার প্রমাণ ১৪৯ পৃষ্ঠায় পাওয়া যাইবে । ‘আর্থিক অবস্থা, এই শিরোনামা দিয়া যে-সকল সংবাদ মুদ্রিত হইয়াছে তাহার মধ্যে এদেশে ব্যাঙ্ক-প্রতিষ্ঠা, কোম্পানীর কাগজ, এদেশের বাণিজ্য, বাজার-দর, বীমা কোম্পানী স্থাপন, ইংরেজের অধীনে এদেশের আর্থিক অবস্থা, এরূপ বহু বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য তথ্য আছে। এই অংশের ১৭৬ ও ১৮৩ পৃষ্ঠায় মুদ্রিত দুইটি বিবরণ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। উহাদের প্রথমটি এক জন চরকা-কাটনির দরখাস্ত । বিলাতী স্থতার আমদানি হওয়ায় এদেশের সাধারণ লোকের অবস্থার শোচনীয় অধোগতি হইয়াছিল, তাহা এই দরখাস্তে শান্তিপুরের ‘কোন দুঃখিনী স্থতা কাটনি অতি করুণ ভাষায় বর্ণনা করিয়াছেন। দ্বিতীয় বিবরণটি এদেশে ইংরেজদের বসবাস (colonization) ও কৃষিকাৰ্য্য করার প্রস্তাব সম্বন্ধে আলোচনা। উহা হইতে আমরা জানিতে পারি, দ্বারকানাথ ঠাকুর ও প্রসন্নকুমার ঠাকুরু টাউন-হলের এক সভায় প্রস্তাব করেন ধে
পাতা:সংবাদপত্রে সেকালের কথা প্রথম খণ্ড.djvu/২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।