সম্পাদকীয় sግግ ধিরাজ তিলকচন্দ্র বাহাদুর বৈশাখ মাসের প্রথম সংক্রাস্তি দিনে মন্দিরোৎসর্গ করিতে বসিয়াছিলেন তাহাতে সংক্রমের ব্যতিক্রমে রাজ পুরোহিতের সঙ্কল্প কালীন চৈত্র মাসের উল্লেখ করেন কিন্তু মহারাজ তাহাতে সন্দিগ্ধ হইয়। অধ্যাপকগণকে জিজ্ঞাসা করিলেন বৈশাখীয় সংক্রমণে চৈত্র মাসে কেন উহ্য হয়, এই জিজ্ঞাসার উত্তরে নবদ্বীপাদি তাবৎ সমাজীয় অধ্যাপক মহাশয়ের কহিলেন সঙ্কল্প মাত্রে চৈত্রই বলিতে হইবেক, সেই সময়ে জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন মহাশয় কেবল চতুষ্পাঠী করিয়াছেন, তিনি কহিলেন রাজ্যেশ্বর যাহ বলিয়াছেন তাহাই হইবেক, চৈত্রমাসি বলিলে সঙ্কল্প বাক্য অশুদ্ধ হয়, ইহাতেই তাবৎ পণ্ডিত এক পক্ষ হইয়া তর্কপঞ্চানন মহাশয়ের সহিত বিতণ্ডাবাদ করিতে লাগিলেন কিন্তু জগন্নাথ পঞ্চানন পঞ্চাননের স্বায় সাহসিক হইয় তাহারদিগের বিতণ্ডাবাদ খগু২ করিয়া দিলেন তাহাতে সঙ্কল্প বাক্যে বৈশাথে মাসি বলিতে হইয়াছিল ইহাতে অধিরাজ বাহাদুর ঐ মহাসমাজমধ্যে জগন্নাথি ললাটে চন্দন লেপন করিয়া কহিলেন আমি অদ্যাবধি তোমাকেই প্রধান গণ্য করিলাম, হে পণ্ডিতগণ, আপনারাও সেই বদ্ধমান তিলকচন্দ্রি কুলচন্দ্র এই চতুর্দশ ভূপেন্দ্রের সাক্ষাতে পূৰ্ব্বপক্ষ সিদ্ধান্ত পক্ষ হইয়াছেন ইহাতে জরিপক্ষ সৰ্ব্বত্র মুখ্যাত হইবেন" এই বক্ত,তার পরে শ্ৰীমন্মহারাজাধিরাজ বাহাদুর শ্মশ্র মুণ্ডন বিষয়ে অতি সুললিত বক্ততা দ্বারা অধ্যাপক সকলকে মোহিত করেন এবং ব্ৰজনাথ বিদ্যারত্ব মহাশয় নানা শাস্ত্র প্রমাণ দ্বারা শ্ৰীশ্ৰীযুতের পক্ষ সুরক্ষা করিলেন ইহাতে মহারাজ বাহাদুর বিদ্যারত্ব মহাশয়ের পৃষ্ঠোপরি চাপড় দিয়া কহিলেন “বাপক। বেটা" * তৎপরে ভবশঙ্কর বিদ্যারত্ন পক্ষীয় পূৰ্ব্বপক্ষ পুনরুথিত হইল আমরা ব্ৰজনাথ বিদ্যারত্ব ভট্টাচাৰ্য্যকে উত্তর পক্ষে বসাইয়া শিবচন্দ্র সাৰ্ব্বভৌম, মহেশচন্দ্র তর্কচূড়ামণি, রামদাস তর্কবাচস্পতি, রামতন্ত্র তর্কসিদ্ধান্ত, ঠাকুরদাস তর্কচূড়ামণি, হরিনারায়ণ তর্কসিদ্ধাস্তাদি মহাশয়গণকে মধ্যস্থ রাখিলাম, এই বিচারে ভবশঙ্কর বিদ্যারত্ব ও ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন উভয় রত্ন সুপণ্ডিত্য রত্ব বৃষ্টি করিলেন ইঙ্গাতে অধিরাজ বাহাদুর র্তাহারদিগকে ধন্যবাদ দিয়াছেন । তৎপরে স্তায় শাস্ত্রের বিচারানুষ্ঠান হুইল আমরা শ্ৰল শ্ৰীযুক্ত মহারাজাধিরাজ বাহাদুরের আজ্ঞানুসারে নৈহাট নিবাসি শ্রীযুক্ত রামকমল ন্যায়রত্ন মহাশয়ের পুত্ৰ শ্ৰীমন্নন্দকুমার ভট্টাচাৰ্য্যকে পূৰ্ব্বপক্ষ পক্ষে উপস্থিত করিলাম এবং নবদ্বীপ নিবাসী তক্ষু বুদ্ধি অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত গোলোকনাথ ন্যায়রত্ন মহাশয়কে সিদ্ধান্তপক্ষে বসাইলাম, শ্ৰীযুক্ত শ্রীরাম শিরোমণি ভট্টাচাৰ্য্য, খ্রীযুক্ত মাধব তর্কসিদ্ধান্ত ভট্টাচাৰ্য্য ও পূৰ্ব্বোক্ত মহামহোপাধ্যায় সকলকে মধ্যস্থলে মধ্যস্থালি কার্য্যে রাখিলাম, শ্ৰীমান নন্দকুমার শক্তিবাদের অম্মম্ভব শক্তি বিচার প্রকরণের এক আপত্তি করিলেন ইহাতে বহুক্ষণ পর্য্যস্ত উভয়
- ব্ৰজনাথ বিদ্যারত্বের পিতা স্বনামধন্ত লক্ষ্মীকান্ত ন্যায়ভূষণ। ন্যায়ভূষণ মহাশয়ের মৃত্যু হইলে সম্বাদ ভাস্কর ২৭ জুলাই ১৮৫৪ তারিখে যাহা লিখিয়াছিলেন, নিম্নে তাহ! উদ্ধত করিলাম ঃ---
“নবদ্বীপের এক অঙ্গ ভঙ্গ – নবদ্বীপ রাজ পুরোহিত অতি বিখ্যাত প্রাচীন পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত ন্তায়ভূষণ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় যিনি নবদ্বীপের দক্ষিণ হস্ত স্বরূপ ছিলেন র্তাহার মৃত্যু হইয়াছে, উপযুক্ত পুত্ৰ শ্ৰীযুক্ত ব্ৰজনাথ বিদ্যারত্ব ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় পিতার মৃত্যুলক্ষণ জানিয়া অগ্ৰেই তাহাকে গঙ্গাতীরে লইয়া গিয়াছিলেন, ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় কয়েক দিবস গঙ্গাবাসানস্তর সকলের সহিত মিষ্টালাপ শিষ্টাচার পূর্বক সজ্ঞানে ভাগীরথী তীর নীরে দেহ পরিত্যাগ করিয়াছেন, নবদ্বীপের অধ্যাপকের কোন ব্যবস্থ। প্রস্তুত করিয়৷ সৰ্ব্বাগ্রে স্থায়ভূষণ মহাশয়ের নিকট সমর্পণ করিতেন তিনি ভাঙ্গতে নাম স্বাক্ষর না করিলে অঙ্গ কেহ স্বাক্ষর করিতে পারিতেন না, লক্ষ্মীকাস্তের দক্ষিণ হস্ত যে ব্যবস্থা পত্রে না উঠিয়াছে সে ব্যবস্থা পত্র ব্যবস্থা পত্রই হয় নাই অতএব আমরা লিখিলাম লক্ষ্মীকান্ত স্থায়ভূষণ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় নবদ্বীপের দক্ষিণ হস্ত ছিলেন র্তাহার মরণে নবদ্বীপের দক্ষিণাঙ্গ দক্ষিণ দিগে প্রস্থান করিল, শ্ৰীযুক্ত ব্ৰজনাখ বিদ্যারত্ব ভট্টাচার্ষ্য মহাশয় যদিও স্মৃতি শাস্ত্রে সুপ্রবিষ্ট হইয়াছেন তথাচ পিতাকে জিজ্ঞাস না করিয়৷ একাল পৰ্য্যস্ত কোন বিষয়ে স্বয়ং হস্তাপণ করেন নাই, মহামহোপাধ্যায় জনকের অনুগ্রহে বহু স্থলে সভা জয়ী হইয়াছেন এইক্ষণে পিতৃহীন হইয়া আশ্রয় শূন্য হইলেন অতএব সাবধানে সন্ত্রম রক্ষা করিবেন।”