পাতা:সখা (১ম ২য় ৩য় বর্ষ) - শিবনাথ শাস্ত্রী .pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

1

প্রচার না হয়, কেহ না পড়িতে পায় । কিন্তু কোথা হইতে যে শত শত কাগজ বিলি হইয়া যায় কেহ ধরিতে পারে না । ঐ সকল কাগজ গোপনে গোপনে বিলি হয়, লোকে পড়ে, গবৰ্ণমেণ্ট কোন রূপেই বারণ করিতে পারে না । হাজার হাজার যুবক ম্যাট সিনির সভার সভ্য হইতে লাগিল। তখন গবৰ্ণমেণ্টের মনে ভয়ের সঞ্চার হইতে লাগিল। তঁহারা দেখিলেন ম্যাট সিনি। ফ্রান্স দেশে থাকিলেও নিস্তার নাই। তখন ফ্রান্স দেশের রাজা লুই ফিলিপকে এই অনুরোধ করা হইল যে, তিনি ম্যাট সিনিকে ফ্রান্স দেশ হইতে তাড়াইয়া দেন। চােরে চােরে মাসতুতো ভাই, রাজায় রাজায় বন্ধুতা না। রাখিলে চলে না। সুতরাং ফ্রান্সের রাজা তাহাই করিলেন। ম্যাট সিনি ফ্রান্সেও থাকিতে পাইলেন না ! ফ্রান্স দেশ পরিত্যাগ করিয়া সুইজারল্যাণ্ড দেশে গমন করিলেন।. সেখানেও তঁাহার বিশ্রাম নাই ; সেখানে নানা দেশের তাড়িত লোকদিগকে একত্ৰ করিয়া নব্য-ইউরোপ নামক আর একটী সভা করিলেন। ঐ সভাতে নানা জাতীয় লোক ছিল, সেখানেও তিনি নূতন স্বাধীনতার জ্বলন্ত ভাব সকলের মনে প্ৰবিষ্ট করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন। অত্যাচারী গবৰ্ণমেণ্ট এখানেও তঁাহাকে সুখে থাকিতে দিল না । ইটালী | গবৰ্ণমেণ্টের অনুরোধে সুইজারল্যাণ্ডের গবর্ণমেণ্টও তাহাকে তাড়াইয়া দিল । এই সময় তাহার বড় ভয়ানক দশা উপস্থিত হইল। কষ্টে দুঃখে দুর্ভাবনায় তাহার শরীর মন ক্লান্ত হইয়া পড়িতে লাগিল ; তিনি স্বদেশের উদ্ধারের বিষয়ে যে আশা করিতেছিলেন, সে বিষয়ে এখন সন্দেহ জন্মিতে লাগিল ; তঁাহার ནི་མི་ তঁহাকে পরিত্যাগ করিতে লাগিল ; যাহার শপথ পূৰ্ব্বক তাহার সাহায্য করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল, তাহারা অনেকে পৃষ্ঠভঙ্গ দিতে লাগিল। এই অবস্থায় ঘোর যাতনাতে তেঁাহাকে দিন কাটাইতে হইয়াছিল। অবশেষে তাহার মনের অন্ধকার আবার সরিয়া গেল। তিনি সুইজারল্যাণ্ড দেশ হইতে তাড়িত হইয়া জগৎ বিখ্যাত ইংলণ্ডে গমন করিলেন । ইংলণ্ডে যে তিনি কি কষ্টে দিন কাটাইতে লাগিলেন তাহার বর্ণনা হয় না । তঁহাকে যখন স্বদেশ হইতে বাহির করিয়া দিল, তখন তঁাহার পিতা পৰ্য্যন্ত র্তাহার প্রতি ত্রুদ্ধ হইলেন। তিনি, যদি বিদেশীয় রাজাদের নিকট একটু ঘাড় হেঁট করিতেন তাহা হইলেই স্বদেশে সুখে বাস করিতে পারিতেন, কিন্তু তাহা করিলেন না । এজন্য র্তাহার পিতা চটিয়া গেলেন। মনে মনে ভাবিলেন “ইটালীতে কি আর যুবক কেহ নাই ; ইটালী কি তাহদের স্বদেশ নয়, দেশের জন্য র্তাহার এত ছটফটানি কেন ?”হায় ! সংসারাসক্ত পিতা বুঝিতে পারিলেন না, পুত্রের প্রাণে কি আগুন জ্বলিয়াছে। তিনি ম্যাট সিনির প্রতি বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “যাক মরুক গিয়ে, আমি র্তাহার খরচের টাকা দিব না।” এই বলিয়া খরচ পত্র বন্ধ করিলেন। সংসারে ম্যাট সিনির মা না থাকিলে বিদেশে অনাহারেই তাহার মৃত্যু হইত। তাহার জননী ও ভগিনী গোপনে আপনাদের টাকা হইতে র্তাহার খরচ পত্রের মত টাকা পাঠাইতে লাগিলেন । তঁহার পিতা তাহা জানিতেন না । এই টাকা পাঠাইবার সময় তঁাহার মাতা ও ভগিনী দিগকে অতিশয় ক্লেশে থাকিতে হইত। ওদিকে ম্যাট সিনি। যে টাকা পাইতেন, তাহ এক জনের মত, কিন্তু བ་༤