পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬৬
কাহিনী

রাজপুত সেনা সরোষে শরমে ছাড়িল সমরসাজ।
নীরবে দাঁড়ায়ে রহিল তোরণে দুর্গেশ দুমরাজ।
গেরুয়াবসনা সন্ধ্যা নামিল পশ্চিম-মাঠ-পারে,
মরাঠা সৈন্য ধুলা উড়াইয়া থামিল দুর্গদ্বারে।
‘দুয়ারের কাছে কে ওই শয়ান—ওঠো ওঠো, খোলো দ্বার।’
নাহি শোনে কেহ; প্রাণহীন দেহ সাড়া নাহি দিল আর।
প্রভুর কর্মে বীরের ধর্মে বিরোধ মিটাতে আজ
দুর্গদুয়ারে ত্যজিয়াছে প্রাণ দুর্গেশ দুমরাজ।

 অগ্রহায়ণ ১৩০৬


গান্ধারীর আবেদন

দুর্যোধন। প্রণমি চরণে তাত। 
ধৃতরাষ্ট্র। ওরে দুরাশয়, 
অভীষ্ট হয়েছে সিদ্ধ?
দুর্যোধন। লভিয়াছি জয়। 
ধৃতরাষ্ট্র। এখন হয়েছ সুখী? 
দুর্যোধন। হয়েছি বিজয়ী। 
ধৃতরাষ্ট্র। অখণ্ড রাজত্ব জিনি সুখ তোর কই, 
রে দুর্মতি?
দুর্যোধন। সুখ চাহি নাই মহারাজ— 
জয়! জয় চেয়েছিনু, জয়ী আমি আজ।
ক্ষুদ্র সুখে ভরে নাকো ক্ষত্রিয়ের ক্ষুধা
কুরুপতি! দীপ্তজ্বালা অগ্নিঢালা সুধা
জয়রস, ঈর্ষাসিন্ধুমন্থনসঞ্জাত,
সদ্য করিয়াছি পান— সুখী নহি তাত,
অদ্য আমি জয়ী। পিতঃ, সুখে ছিনু যবে
একত্রে আছিনু বদ্ধ পাণ্ডবে কৌরবে,
কলঙ্ক যেমন থাকে শশাঙ্কের বুকে,