পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮৮
পূরবী

আমারে চেনে না তব শ্মশানের বৈরাগ্যবিলাসী—
দারিদ্র্যের উগ্র দর্পে খলখল ওঠে অট্টহাসি
দেখে মোর সাজ।
হেনকালে মধুমাসে মিলনের লগ্ন আসে,
উমার কপোলে লাগে স্মিতহাস্যবিকশিত লাজ।
সেদিন কবিরে ডাক’ বিবাহের যাত্রাপথতলে,
পুষ্পমাল্যমাঙ্গল্যের সাজি লয়ে সপ্তর্ষির দলে
কবি সঙ্গে চলে।

ভৈরব, সেদিন তব প্রেতসঙ্গীদল রক্ত-আঁখি
দেখে তব শুভ্রতনু রক্তাংশুকে রহিয়াছে ঢাকি
প্রাতঃসূর্যরুচি।
অস্থিমালা গেছে খুলে মাধবীবল্লরীমূলে,
ভালে মাথা পুষ্পরেণু— চিতাভস্ম কোথা গেছে মুছি!
কৌতুকে হাসেন উমা কটাক্ষে লক্ষিয়া কবি-পানে—
সে হাস্যে মন্দ্রিল বাঁশি সুন্দরের জয়ধ্বনিগানে
কবির পরানে।

 কার্তিক ১৩৩০


লীলাসঙ্গিনী

দুয়ার বাহিরে যেমনি চাহি রে মনে হল যেন চিনি—
কবে নিরুপমা ওগো প্রিয়তমা, ছিলে লীলাসঙ্গিনী!
কাজে ফেলে মোরে চলে গেলে কোন্ দূরে,
মনে পড়ে গেল আজি বুঝি বন্ধুরে?
ডাকিলে আবার কবেকার চেনা সুরে, বাজাইলে কিঙ্কিণী।
বিশ্বরণের গোধূলিক্ষণের আলোকে তোমারে চিনি।