পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ সপ্তক
৬৮৭

আকাশের তারাগুলো
যেন উঠল থর্‌থরিয়ে
সবাই জানে রোঘো ডাকাতের
পাঁজর-ফাটানো ডাক।
বরসুদ্ধ পাল্‌কি পড়ল পথের মধ্যে;
বেহারা পালাবে কোথায় পায় না ভেবে।
ছুটে বেরিয়ে এল মেয়ের মা;
অন্ধকারের মধ্যে উঠল তার কান্না—
‘দোহাই বাবা, আমার মেয়ের জাত বাঁচাও।’
রোঘো দাঁড়ালো যমদূতের মতো—
পাল্‌কি থেকে টেনে বের করলে বরকে,
বরকর্তার গালে মারল একটা প্রচণ্ড চড়,
পড়ল সে মাথা ঘুরে।

ঘরের প্রাঙ্গণে আবার শাঁখ উঠল বেজে,
জাগল হুলুধ্বনি,
দলবল নিয়ে রোঘো দাঁড়ালো সভায়
শিবের বিয়ের রাতে ভূতপ্রেতের দল যেন।
উলঙ্গপ্রায় দেহ সবার, তেল-মাখা সর্বাঙ্গ,
মুখে ভুসোর কালী।
বিয়ে হল সারা।
তিন পহর রাতে
যাবার সময় কনেকে বললে ডাকাত,
‘তুমি আমার মা,
দুঃখ যদি পাও কখনো
স্মরণ কোরে। রঘুকে।’

তার পরে এসেছে যুগান্তর