যেদিন দূরে শহরেতে চলছিল রামলীলা
পাহারাটা ছিল সেদিন ঢিলা।
সেই সুযোগে গৌড়বাসী তখনি এক দৌড়ে
ফিরে এল গৌড়ে,
চলে গেল সেই রাত্রেই ঢাকা—
মাঝের থেকে চর পেয়ে যায় দশটি হাজার টাকা।
কিন্তু গুজব শুনতে পেলেম, শেষে
কানে মোচড় খেয়ে টাকা ফেরত দিয়েছে সে।’
‘কেন তুমি ফিরে এলে’ চেঁচাই চারি পাশে,
যোগিন্দাদা একটু কেবল হাসে।
তার পরে তো শুতে গেলেম; আধেক রাত্রি ধ’রে
শহরগুলোর নাম যত সব মাথার মধ্যে ঘোরে।
ভারতভূমির সব ঠিকানাই ভুলি যদি দৈবে
যোগিন্দাদার ভূগোল-গোলা গল্প মনে রইবে।
জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৪
বাসাবাড়ি
এই শহরে এই তো প্রথম আসা।
আড়াইটা রাত, খুঁজে বেড়াই কোন্ ঠিকানায় বাসা
লণ্ঠনটা ঝুলিয়ে হাতে আন্দাজে যাই চলি,
অজগরের ভূতের মতন গলির পরে গলি।
ধাঁধা ক্রমেই বেড়ে ওঠে, এক জায়গায় থেমে
দেখি পথের বাঁ দিক থেকে ঘাট গিয়েছে নেমে।
আঁধার-মুখোষ-পরা বাড়ি সামনে আছে খাড়া—
হাঁ-করা-মুখ দুয়ারগুলো, নাইকো শব্দসাড়া।
চৌতলাতে একটা ধারে জানলাখানার ফাঁকে
প্রদীপশিখা ছুঁচের মতো বিঁধছে আঁধারটাকে।