পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রোগশয্যায়
৮১৭

আজকে তারা এল আমার স্বপ্নলোকের দুয়ার ঘিরে,
সুরহারা সব ব্যথা যত একতারা তার খুঁজে ফিরে।
প্রহর পরে প্রহর যে যায়, বসে বসে কেবল গণি
নীরব জপের মালার ধ্বনি
অন্ধকারের শিরে শিরে।

জোড়াসাঁকো
৩০ অক্টোবর ১৯৪০


আমার দিনের শেষ ছায়াটুকু

আমার দিনের শেষ ছায়াটুকু মিশাইলে মূলতানে;
গুঞ্জন তার রবে চিরদিন, ভুলে যাবে তার মানে।
কর্মক্লান্ত পথিক যখন বসিবে পথের ধারে
এই রাগিণীর করুণ আভাস পরশ করিবে তারে;
নীরবে শুনিবে মাথাটি করিয়া নিচু;
শুধু এইটুকু আভাসে বুঝিবে, বুঝিবে না আর কিছু—
বিস্মৃত যুগে দুর্লভ ক্ষণে বেঁচেছিল কেউ বুঝি,
আমরা যাহার খোঁজ পাই নাই তাই সে পেয়েছে খুঁজি।

জোড়াসাঁকো
১৩ নভেম্বর ১৯৪০


খুলে দাও দ্বার

খুলে দাও দ্বার,
নীলাকাশ করো অবারিত;
কৌতূহলী পুষ্পগন্ধ কক্ষে মোর করুক প্রবেশ;
প্রথম রৌদ্রের আলো
সর্বদেহে হোক সঞ্চারিত শিরায় শিরায়;
আমি বেঁচে আছি, তারি অভিনন্দনের বাণী
মর্মরিত পল্লবে পল্লবে আমারে শুনিতে দাও—