পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮৪৮
সঞ্চয়িতা
৮৪৮

৮৪৮ সঞ্চয়িতা

উপর সবুজ ঘাস উঠত, শরতের আলো পড়ত, সূর্যকিরণে আমার সুদূরবিস্তৃত শ্যামল অঙ্গের প্রত্যেক রোমকূপ থেকে যৌবনের সুগন্ধি উত্তাপ উত্থিত হতে থাকত, আমি কত দূর-দূরান্তর কত দেশ-দেশান্তরের জলস্থল পর্বত ব্যাপ্ত করে উজ্জ্বল আকাশের নীচে নিস্তব্ধ ভাবে শুয়ে পড়ে থাকতুম — তখন শরৎ সূর্যালোকে আমার বৃহৎ সর্বাঙ্গে যে-একটি আনন্দরস, একটি জীবনীশক্তি, অত্যন্ত অব্যক্ত অর্ধচেতন এবং অত্যন্ত প্রকাও ভাবে সঞ্চারিত হতে থাকত, তাই যেন খানিকটা মনে পড়ে। আমার এই-যে মনের ভাব এ যেন এই প্রতিনিয়ত অঙ্কুরিত মুকুলিত পুলকিত সূর্যসনাথা আদিম পৃথিবীর ভাব। যেন আমার এই চেতনার প্রবাহ পৃথিবীর প্রত্যেক ঘাসে এবং গাছের শিকড়ে-শিকড়ে শিরায় শিরায় ধীরে ধীরে প্রবাহিত হচ্ছে, সমস্ত শ্যক্ষেত্র রোমাঞ্চিত হয়ে উঠছে এবং নারকেল গাছের প্রত্যেক পাতা জীবনের আবেগে থর থর করে কাঁপছে। এই পৃথিবীর উপর আমার যে-একটি আস্তরিক আত্মীয়বৎসলতার ভাব আছে, ইচ্ছে করে সেটা ভালো ক'রে প্রকাশ করতে— কিন্তু, ওটা বোধ হয় অনেকেই ঠিকটি বুঝতে পারবে না, কী একটা কিম্ভূত রকমের মনে করবে। শিলাইদহ। ২০ অগস্ট ১৮৯২

গানভঙ্গ । ইহাকে স্বপ্নল কাহিনী বলা যায়। এই সম্পর্কে ছিন্নপত্র গ্রন্থে ৩. ৭. ১৮৯২ তারিখের পত্র দ্রষ্টব্য।

বিদায়-অভিশাপ। সাধনা পত্রিকার ১৩০০ মাঘ সংখ্যায় প্রকাশিত। পঞ্চভূত গ্রন্থে 'কাব্যের তাৎপর্য' প্রবন্ধে ইহার বিস্তৃত আলোচনা স্রষ্টব্য। কবিতার ভূমিকাটি নিম্নে সংকলিত হইল—

দেবগণ কর্তৃক আদিষ্ট হইয়া বৃহস্পতিপুত্র কচ দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের নিকট হইতে সঞ্জীবনীৰিতা শিখিবার নিমিত্ত তৎ সমীপে গমন করেন। সেখানে সহস্র বৎসর অতিবাহন করিয়া এবং নৃত্য গীত বাঘ -দ্বারা অরুদুহিতা দেবযানীর মনোরঞ্জন-পূর্বক সিদ্ধ কাম হইয়া কচ দেবলোকে প্রত্যাগমন করেন। দেবানীর নিকট