পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮৫৫
সঞ্চয়িতা
৮৫৫
            গ্রন্থপরিচয়                  ৮৫৫

আত্মহৃদয়ের অকৃত্রিম উচ্ছাস-মহকারে ব্যক্ত করিলে প্রেমের মহিমা ঢের বেশি সরল উজ্জ্বল উদার এবং বিশুদ্ধ ভাবে দেখানো! হয়- সাহেবের দ্বারা অপমানিত অভিমানক্ষুন্ন নিরুপায় কেরানির মুখে এ কথাগুলো! যেন কিছু অধিক মাত্রায় আড়ম্বর ও আস্ফালনের মতো শুনায়। উহার সহজ স্বতঃপ্রবাহিত সর্ববিস্মৃত কবিত্বরসটি থাকে না; মনে হয়, সে মুখে যতই বড়াই করুক-না কেন, আপনার ক্ষুদ্রতা এবং অপমান কিছুতেই ভুলিতে পারিতেছে না। এই-সমস্ত আলোচনাদি শুনিয়া, , আমি গোড়ায় যেভাবে লিখিয়াছিলাম সেই ভাবেই প্রকাশ করিয়াছি। শিলাইদহ-কুমারখালি। ৬ চৈত্র ১৩০২ নগরসংগীত। সাধনা পত্রিকার ১৩০২ কার্তিক সংখ্যায় প্রকাশিত। উর্বশী। রবীন্দ্রনাথ একখানি পত্রে শ্রীমতী ইন্দিরাদেবীকে লেখেন - আজ ভোর চারটের সময় ঘুম ভেঙে গেল- উঠে কতকগুলো গরম কাপড় জড়িয়ে বাতি জেলে উর্বশী -নামক একটি কবিতা শেষ করে ফেল্লুম -_যখন সাড়ে সাতটা তখন স্নান করতে গেলুম - এমনি করে এই দুদিনে দুটি বেশ বড়সড় কবিতা শেষ করে ফেলেছি। [২৩ অগ্রহায়ণ ১৩০২) এই পত্র “শিলাইদহ জলপথে লেখা হয়, কিছুকাল পূর্বে বিশ্বভারতী পত্রিকার প্রকাশিত। (অন্য কবিতাটি চিত্রাকাব্যেরই 'আবেদন” এইরূপ অনুমান অসংগত হয় না।) উর্বশী'র ভাবব্যাখ্যা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, অধ্যাপক চারুর বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখেন-- নারীর মধ্যে সৌন্দর্যের যে প্রকাশ, উর্বশী তারই প্রতীক। যে সৌন্দর্য আপনাতেই আপনার চরম লক্ষ্য - কোনো কর্তব্য যদ তার পথে এসে পড়ে তবে সে কর্তব্য বিপর্যস্ত হয়ে যায়." সে নিছক নারী-_ মাতা! কন্যা বা গৃহিণী সে নয়_যে নারী সাংসারিক সম্বন্ধের অতীত, মোহিনী, সেই । মনে রাখতে হবে উর্বশী কে। সে ইন্দ্রের ইন্দ্রানী নয়, বৈকষ্ঠের লঙ্মী নয, সে স্বর্গের নর্তকী, দেবলোবের অমৃতপানসভার সখী । দেবতার ভোগ নারীর মাংস নিয়ে নয়, নারীর সৌন্দর্য নিয়ে। হোক-না সে দেহের সৌন্দর্য, কিন্তু সেই তো সৌন্দর্যের