পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
মেঘনাদবধ কাব্য

বক্ষঃস্থল। “হে জননি!” কহিলা বিষাদে
বীরেন্দ্র;—“দাসের প্রতি কেন বাম এত
তুমি? দেহ দেখা পুনঃ, পূজি পা-দুখানি;
পূরাই মনের সাধ লয়ে পদধূলি,
মা আমার! যবে আমি বিদায় হইনু,
কত যে কাঁদিলে তুমি, স্মরিলে বিদরে
হৃদয়! আর কি, দেবি, এ বৃথা জনমে
হেরিব চরণ-যুগ?” মুছি অশ্রুধারা,
চলিলা বীর-কুঞ্জর কুঞ্জর-গমনে
যথা বিরাজেন প্রভু রঘু-কুল-রাজা।
কহিলা অনুজ, নমি অগ্রজের পদে;—
“দেখিনু অদ্ভুত স্বপ্ন রঘুকুল-পতি!
শিরোদেশে বসি মোর সুমিত্রা জননী
কহিলেন,—‘উঠ, বৎস! পোহাইল রাতি।
লঙ্কার উত্তর-দ্বারে বনরাজী-মাঝে
শোভে সরঃ; কূলে তার চণ্ডীর দেউল
স্বর্ণময়; স্নান করি সেই সরোবরে,
তুলিয়া বিবিধ ফুল, পূজ ভক্তিভাবে
দানব দলনী মায়ে। তাঁহার প্রসাদে,
বিনাশিবে অনায়াসে দুর্ম্মদ রাক্ষসে,
যশস্বি! একাকী, বৎস, যাইও সে বনে।’
এতেক কহিয়া মাতা অদৃশ্য হইলা।