পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
মেঘনাদবধ কাব্য

তোষ তুমি, মহেষ্বাস, পৌরজনগণে।”
আচম্বিতে দেবদূত অদৃশ্য হইলা,
স্বর্গীয়-সৌরভে সভা পূরিল চৌদিকে!
দেখিলা রাক্ষসনাথ দীর্ঘজটাবলী,
ভীষণ ত্রিশূল-ছায়া! কৃতাঞ্জলিপুটে
প্রণমি, কহিলা শৈব;—“এত দিনে, প্রভু,
ভাগ্যহীন ভৃত্যে এবে পড়িল কি মনে
তোমার? এ মায়া, হায়, কেমনে বুঝিব
মূঢ় আমি, মায়াময়? কিন্তু অগ্রে পালি
আজ্ঞা তব, হে সর্ব্বজ্ঞ! পরে নিবেদিব
যা কিছু আছে এ মনে ও রাজীব-পদে।”
সরোষে—তেজস্বী আজি মহারুদ্রতেজে-
কহিলা রাক্ষসশ্রেষ্ঠ;—“এ কনকপুরে,
ধনুর্দ্ধর আছ যত, সাজ শীঘ্র করি
চতুরঙ্গে! রণরঙ্গে ভুলিব এ জ্বালা—
এ বিষম জ্বালা যদি পারিরে ভুলিতে।”
উথলিল সভাতলে দুন্দুভির ধ্বনি,
শৃঙ্গনিনাদক যেন, প্রলয়ের কালে,
বাজাইলা শৃঙ্গবরে গম্ভীর-নিনাদে।
যথা সে ভৈরব-রবে কৈলাস-শিখরে
সাজে আশু ভূতকুল, সাজিল চৌদিকে
রাক্ষস; টলিল লঙ্কা বীরপদভরে!