পাতা:সটীক মেঘনাদবধ কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯১৯).pdf/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৮
মেঘনাদবধ কাব্য

দেখিলা পুণ্ডরীকাক্ষ, দেবদল বেগে
ধাইছে লঙ্কার পানে, পক্ষিরাজ যথা
গরুড়, হেরিয়া দূরে সদা-ভক্ষ্য ফণী,
হুঙ্কারে! পূরিছে বিশ্ব গম্ভীর নির্ঘোষে!
পলাইছে যোগিকুল যোগ-যাগ ছাড়ি;
কোলে করি শিশুকুলে কাঁদিছে জননী,
ভয়াকুলা; জীবব্রজ ধাইছে চৌদিকে
ছন্নমতি। ক্ষণকাল চিন্তি চিন্তামণি
(যোগীন্দ্র-মানস-হংস) কহিলা মহীরে;—
“বিষম বিপদ, সতি! উপস্থিত দেখি
তব পক্ষে! বিরূপাক্ষ, রুদ্রতেজোদানে,
তেজস্বী করিলা আজি রক্ষঃকুলরাজে।
না হেরি উপায় কিছু; যাহ তাঁর কাছে,
মেদিনি!” পদারবিন্দে কাঁদি উত্তরিলা
বসুন্ধরা;—“হায় প্রভু! দুরন্ত সংহারী
ত্রিশূলী; সতত রত নিধনসাধনে।
নিরন্তর তমোগুণে পূর্ণ ত্রিপুরারি।
কাল-সর্প-সাধ, শৌরি! সদা দগ্ধাইতে,
উগরি বিষাগ্নি, জীবে। দয়াসিন্ধু তুমি,
বিশ্বম্ভর; বিশ্বভার তুমি না বহিলে,
কে আর বহিবে, কহ? বাঁচাও দাসীরে,
হে শ্রীপতি! এ মিনতি ও রাঙ্গা-চরণে!”